০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শার্শায় শিয়ালের ফাঁদে কৃষকের মৃত্যু’ মামলা না করতে ভয় দেখানোর অভিযোগ!

 

যশোরঃ যশোরের শার্শায় হাসের খামারে শিয়াল মারার উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের জিআই তারে বিদ্যুত স্পৃষ্ট হয়ে আহাদ আলী (৭০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (১৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

নিহত কৃষক আহাদ আলী উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাহাদুর মোড়লের ছেলে। অপরদিকে হাসের খামার মালিক সোহাগ হোসেন ওরফে কালু মিয়া একই গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে।

কৃষক আহাদ আলীর মৃত্যু খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ঐ হাসের খামারটি ভাঙচুর করেছে। এর আগে ওই খামারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গবাদি পশু গরু, কুকুর ও শিয়ালের মৃত্যু হলেও গ্রামবাসী একাধীকবার খামার মালিক কালুকে বৈদ্যুতিক ফাঁদ তুলে নিতে অনুরোধ করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি বলে দাবী গ্রামবাসীর।

নিহত আহাদ আলীর বৌমা জুলেখা বেগম জানান, আমার শ্বশুর সকালে জমিতে কাজ করতে গিয়েছিল, তার জমির পাশেই ছিল কালুর হাসের খামার। তিনি প্রতিদিন সেখানে শিয়াল মারার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখত। সেই বিদ্যুত সংযোগের তার আমাদের জমির আইলের উপর দিয়ে ফেলে রাখত। আজ কালু বিদ্যুৎ বন্ধ না করায়’ আমার শ্বশুর বিদ্যুত স্পৃষ্ট মারা গেছে। তিনি আরও জানান, ঘটনার পর কালুর চাচাতো ভাই জুয়েল নিজেকে পুলিশের বড় অফিসার পরিচয় দেন। এসময় তিনি আমাদের পরিবারকে মামলা না করার জন্য হুমকিও দেন। আমার স্বামী ও তার তিন ভাই বিদেশে থাকেন, বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই, যে কারণে আমরা মামলা করতে ভয় পাচ্ছি।

স্থানীয়া জানান, কালুর হাসের খামারে আগেও বিদ্যুৎ ফাঁদে পড়ে একটি গরু, একটি কুকুর এবং একটি শিয়াল মারা গেছে। আমরা তখন তাকে (কাকুলে) এই কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে বলেছি। কিন্তু সে আমাদের কথা শোনেনি। আজ একজন মানুষ মর্মান্তিকভাবে মারা গেল।

অভিযুক্ত জুয়েলের কাছে উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তাহার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন পুলিশ কনস্টেবল, আগে ডিবিতে ছিলাম। আমি কাউকে হুমকি দেইনি।

শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম. রবিউল ইসলাম জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। তবে’ পুলিশের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

শার্শায় শিয়ালের ফাঁদে কৃষকের মৃত্যু’ মামলা না করতে ভয় দেখানোর অভিযোগ!

শার্শায় শিয়ালের ফাঁদে কৃষকের মৃত্যু’ মামলা না করতে ভয় দেখানোর অভিযোগ!

প্রকাশের সময়ঃ ০৯:০৬:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

 

যশোরঃ যশোরের শার্শায় হাসের খামারে শিয়াল মারার উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের জিআই তারে বিদ্যুত স্পৃষ্ট হয়ে আহাদ আলী (৭০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (১৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

নিহত কৃষক আহাদ আলী উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাহাদুর মোড়লের ছেলে। অপরদিকে হাসের খামার মালিক সোহাগ হোসেন ওরফে কালু মিয়া একই গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে।

কৃষক আহাদ আলীর মৃত্যু খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ঐ হাসের খামারটি ভাঙচুর করেছে। এর আগে ওই খামারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গবাদি পশু গরু, কুকুর ও শিয়ালের মৃত্যু হলেও গ্রামবাসী একাধীকবার খামার মালিক কালুকে বৈদ্যুতিক ফাঁদ তুলে নিতে অনুরোধ করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি বলে দাবী গ্রামবাসীর।

নিহত আহাদ আলীর বৌমা জুলেখা বেগম জানান, আমার শ্বশুর সকালে জমিতে কাজ করতে গিয়েছিল, তার জমির পাশেই ছিল কালুর হাসের খামার। তিনি প্রতিদিন সেখানে শিয়াল মারার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখত। সেই বিদ্যুত সংযোগের তার আমাদের জমির আইলের উপর দিয়ে ফেলে রাখত। আজ কালু বিদ্যুৎ বন্ধ না করায়’ আমার শ্বশুর বিদ্যুত স্পৃষ্ট মারা গেছে। তিনি আরও জানান, ঘটনার পর কালুর চাচাতো ভাই জুয়েল নিজেকে পুলিশের বড় অফিসার পরিচয় দেন। এসময় তিনি আমাদের পরিবারকে মামলা না করার জন্য হুমকিও দেন। আমার স্বামী ও তার তিন ভাই বিদেশে থাকেন, বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই, যে কারণে আমরা মামলা করতে ভয় পাচ্ছি।

স্থানীয়া জানান, কালুর হাসের খামারে আগেও বিদ্যুৎ ফাঁদে পড়ে একটি গরু, একটি কুকুর এবং একটি শিয়াল মারা গেছে। আমরা তখন তাকে (কাকুলে) এই কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে বলেছি। কিন্তু সে আমাদের কথা শোনেনি। আজ একজন মানুষ মর্মান্তিকভাবে মারা গেল।

অভিযুক্ত জুয়েলের কাছে উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তাহার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন পুলিশ কনস্টেবল, আগে ডিবিতে ছিলাম। আমি কাউকে হুমকি দেইনি।

শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম. রবিউল ইসলাম জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। তবে’ পুলিশের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।