১১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ 

  • ডেস্ক নিউজঃ
  • প্রকাশের সময়ঃ ০৩:২৮:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

ঢাকাঃ বাংলাদেশে নিযুক্ত নতুন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সফরে ঢাকায় এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিশ্বব্যাংকের জোহানেস জুট।

সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এ প্রশংসা করেন।

সাক্ষাৎকালে তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের নতুন বিভাগীয় পরিচালক জ্যাঁ পেসমে। আলোচনার সময় জুট বলেন, ‘আপনি এবং আপনার দল খুব চমৎকার কাজ করছেন। বিশেষ করে আর্থিক খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনাদের নেতৃত্ব প্রশংসার যোগ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, আমরা সেটার সঙ্গে একমত। আমরা এই যাত্রা আরও এগিয়ে নিতে প্রস্তুত।’ সাক্ষাৎকালে গত বছরের জুলাই গণআন্দোলনে নিহত ছাত্রদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের জন্যই সেটা ছিল এক আবেগঘন মুহূর্ত।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন পরিস্থিতি ছিল ভূমিকম্প-পরবর্তী ধ্বংসস্তূপের মতো। অভিজ্ঞতা না থাকলেও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা আমাদের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই আন্দোলনে তরুণরা আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে। বিশেষ করে নারী ও নারীশিক্ষার্থীদের সাহসিকতা ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যায় না। আমরা আজ “জুলাই নারী দিবস” পালন করছি।’

বাংলাদেশকে কেবল একটি ভৌগোলিক সীমারেখায় না দেখে বড় পরিসরে দেখতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান ইউনূস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রগতি মানেই দক্ষিণ এশিয়ার সমৃদ্ধি। আমরা চাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিবহন সুবিধা বাড়াতে।’

তরুণদের কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের তরুণ জনশক্তি বেশি। তাই আমরা অন্যান্য দেশকে বলছি, আপনারা আপনাদের কারখানা বাংলাদেশে আনুন। আমরা উৎপাদন হাব গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু দিতে প্রস্তুত।’

বিশ্বব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট জুট বলেন, ‘নারী ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের অবদান প্রশংসনীয়। আমরা ভবিষ্যতেও সহায়তা অব্যাহত রাখব।’ তিনি জানান, গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে তিন বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছর একই ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, নতুন ব্যবস্থাপনার ফলে এনসিটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

দেবহাটা জলবদ্ধতা নিরাসনে অবৈধ নেট,পাটা, অপসারণ করলেন নির্বাহী কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ 

প্রকাশের সময়ঃ ০৩:২৮:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

ঢাকাঃ বাংলাদেশে নিযুক্ত নতুন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সফরে ঢাকায় এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিশ্বব্যাংকের জোহানেস জুট।

সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এ প্রশংসা করেন।

সাক্ষাৎকালে তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের নতুন বিভাগীয় পরিচালক জ্যাঁ পেসমে। আলোচনার সময় জুট বলেন, ‘আপনি এবং আপনার দল খুব চমৎকার কাজ করছেন। বিশেষ করে আর্থিক খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনাদের নেতৃত্ব প্রশংসার যোগ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, আমরা সেটার সঙ্গে একমত। আমরা এই যাত্রা আরও এগিয়ে নিতে প্রস্তুত।’ সাক্ষাৎকালে গত বছরের জুলাই গণআন্দোলনে নিহত ছাত্রদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের জন্যই সেটা ছিল এক আবেগঘন মুহূর্ত।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন পরিস্থিতি ছিল ভূমিকম্প-পরবর্তী ধ্বংসস্তূপের মতো। অভিজ্ঞতা না থাকলেও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা আমাদের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই আন্দোলনে তরুণরা আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে। বিশেষ করে নারী ও নারীশিক্ষার্থীদের সাহসিকতা ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যায় না। আমরা আজ “জুলাই নারী দিবস” পালন করছি।’

বাংলাদেশকে কেবল একটি ভৌগোলিক সীমারেখায় না দেখে বড় পরিসরে দেখতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান ইউনূস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রগতি মানেই দক্ষিণ এশিয়ার সমৃদ্ধি। আমরা চাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিবহন সুবিধা বাড়াতে।’

তরুণদের কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের তরুণ জনশক্তি বেশি। তাই আমরা অন্যান্য দেশকে বলছি, আপনারা আপনাদের কারখানা বাংলাদেশে আনুন। আমরা উৎপাদন হাব গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু দিতে প্রস্তুত।’

বিশ্বব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট জুট বলেন, ‘নারী ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের অবদান প্রশংসনীয়। আমরা ভবিষ্যতেও সহায়তা অব্যাহত রাখব।’ তিনি জানান, গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে তিন বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছর একই ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, নতুন ব্যবস্থাপনার ফলে এনসিটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।