
মুফতি আলাউদ্দীন আল আজাদ
⚪ হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনের কিছু অংশ,কিছু বাণী,কিছু আলোচনা আছে জাদুর মত। যা এ সময়ে আমাদের জন্য জীবন্ত উপমা। আমরা যদি তার তুলনায় অন্যদেরকে সামনে রাখি তাহলে ধ্বংস হয়ে যাব। একান্ত যদি কাউকে অনুসরণ করতেই হয় তাহলে তার অনুসরণ করব – আল্লাহ তা’আলা যার নামে কসম খেয়েছেন। যার নেতৃত্বের সাক্ষ্য আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন। যার পিছনে সকল নবীকে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে । যার ঊর্ধ্ব গমন নিয়ে আরশ ও পৃথিবী আনন্দিত । হযরত জিব্রাইল (আ:)এর শক্তি যে পর্যন্ত যাওয়ার পর শেষ হয়েছে।সেখানেও তিনি অগ্রসর হতে পেরেছেন আরো উপরে আল্লাহ ডেকে নিয়েছেন। হযরত আম্বিয়া (আ:) যাকে অভিবাদন জানাবার জন্য সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে । যার শুভ আগমন উপলক্ষে আকাশকে সুসজ্জিত করে রাখা হয়েছে। ফেরেশতাদেরকে ডেকে আনা হয়েছে তাকে অভিনন্দন জানাবার জন্য। এই যার মর্যাদা তার কন্যার মর্যাদা কেমন হতে পারে ।
⚪ সিদরাতুল মুনতাহায় গিয়ে সকল মাখলুকের শক্তি শেষ হয়ে যায়। হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের শক্তি ও শেষ। সিদরাতুল মুনতাহায় নবী রাসুল ওলি আউলিয়া সকলেরই শেষ সীমা সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত। অথচ আরশ পর্যন্ত আজ কম্পিত – হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করেছেন আমার উপরে আবার কোন বেয়াদবি হয়ে যায় কিনা তার আগমনে আরো আনন্দে আন্দোলিত। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সাক্ষাৎ হবে তার বাহনটি আজ আমার উপর দিয়ে হেঁটে যাবে। আরশের উপর থেকে আজ সিংহাসন নামানো হয়েছে তাকে আরো উপরে তুলে নেওয়া হয়েছে। সংকুচিত হয়েছে পড়েছে আরশ আরশ আজ তার সামনে সমর্পিত ।
⚪ যার সামনে আরশ নিচু হয়ে পড়ে প্রেম পুণ্য দৃষ্টিতে যাকে আরশ প্রত্যক্ষ করে। ৭০০০০ হাজার নূরের পর্দা যেখানে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর দর্শন লাভে আনন্দে উজ্জ্বলিত। সেখানে প্রতিটি পর্দা তার কাছে দোয়া কামনা করে নিজেকে সরিয়ে দেয় ।এ আমাদের নবীর শান । তার মত শানের অধিকারী কোন নবী আগমন করেনী, তার শান আজও পর্যন্ত কোন প্রশংসাকারী পূর্ণরূপে ব্যক্ত করতে পারেনি।কোন পৃথিবী ব্যক্ত করতে পারেনি ও ব্যক্ত করতে পারেনি কোন মুফাসসির। আমার প্রভুর কসম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর শান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেও বর্ণনা করে শেষ করতে পারবে না । আমরা সকলে মিলে চেষ্টা করলেও পারবো না । যা কিছু বলা হয়েছে তা খুবই সামান্য। দিনে ও রাতে যা বলা হবে তাও সামান্য ।যার মর্যাদা এত ঊর্ধ্বে-আরশ যার সামনে ঝুকে পড়ে যার সামনে চন্দ্র সূর্য উপগ্রহ ফেরেশতা এবং আরশের নূরের পর্দা। আল্লাহ তা’আলা তাকে নিজের সামনে দাঁড় করিয়েছেন । মুখোমুখি দিদার হয়েছে সামান্য ভুলের শিকার হননি এর চেয়েও বড় সম্মানের কথা হল । আল্লাহ তাকে এভাবে সম্বোধন করেছেন-
السلام عليك ايها النبي
হে নবী! তোমার প্রভু তোমাকে সালাম বলেছে ।
অতঃপর সালাম-কালাম একান্তে কথাবার্তা এমন মর্যাদা আর কার আছে। অনুসরণ করার মত তার জীবনের চাইতে উত্তম জীবন এই পৃথিবীতে আর কার আছে। তার জীবনকেই তো আমরা অনুসরণ করতে চাচ্ছি । তার জন্য আমরা যতই কাঁদবো তা খুবই সামান্য তার জন্য কাঁদতে পারাটাও আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয় ।
⚪ অতঃপর একান্ত কাছে হওয়া সত্ত্বেও আরো কাছে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন –
اذن مني يا حبيبي يا محمد
সে আমার হাবিব!হে মোহাম্মদ আরো কাছে এসো ।
⚪ প্রিয় পাঠক!
যদি কারো জীবনকে অনুসরণ করতে হয় তাহলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনকে অনুসরণ করা। যাকে আল্লাহ তাআলা সালাম করে । যাকে আল্লাহ তা’আলা এই বলে সান্ত্বনা দেন-
ولسوف يعطيك ربك فترضى
অচিরেই তোমার প্রতিপালক তোমাকে অনুগ্রহ দান করবেন ।আর তুমি সন্তুষ্ট হবে। (দোহা – ৫)
আল্লাহ তাআলা তাঁর হাবিবকে বলেছেন আমি তোমাকে সন্তুষ্ট করে দেব। আর আমাদেরকে বলেছেন, আমাকে রাজি করো। আমাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করো ।
والله ورسوله احق ان يرضوه
আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর এই অধিক হকদার যে তারা তাদেরকে সন্তুষ্ট করে ।(তাওবা – ৬২ )
সন্তুষ্ট করো আমাকে সন্তুষ্ট করো আমার নবীকে। পক্ষান্তরে নবী বলেছেন অচেরি তোমার প্রতিপালক তোমাকে অনুগ্রহ দান করবে। আর তুমি তাতে সন্তুষ্ট হবে। আল্লাহ তাআলা হযরত রসুল সাল্লাল্লাহু আলাই অসাল্লাম এর প্রাণের কসম খেয়েছন।
তাই আসুন আমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমাদের প্রাণের চেয়ে আমাদের সবকিছুতে বেশি ভালোবাসি। এবং তার আদর্শে আদর্শবান হই তাহলে আমরা তার সুপারিশের অধিকারী হতে পারব ।
মুফতি আলাউদ্দিন আল আজাদ,শ্যামনাগরী ।
খতিব-কোনাবাড়ী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ,গাজীপুর।