০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসলামের দৃষ্টিতে তাবিজ ও ঝাড়-ফুঁক

 

✍️মাওলানা শেখ মিলাদ হোসাইন সিদ্দিকীঃ ★আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

,يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِيْنَ-

‘হে মানুষ! তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমাদের কাছে এসেছে নছীহত এবং তোমাদের অন্তরে যা আছে তার নিরাময়। আর মুমিনদের জন্য সঠিক পথের দিশা ও রহমত’ (ইউনুস ১০/৫৭)। অতএব কুরআন হ’ল সকল প্রকার মানসিক ও শারীরিক রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য দানকারী।

ঝাড়-ফুঁককে আরবীতে ‘রুকইয়া’ বলে। ‘রুক্বইয়া’ হ’ল যার দ্বারা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রর্থনা করা হয় এবং আরোগ্যের জন্য রোগীকে ফুঁক দেওয়া হয়।

ঝাড়-ফুঁক শরী‘আত সম্মত একটি প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থা। রাসূল (ছাঃ) নিজেও ঝাড়-ফুঁক করতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন,

أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَنْفُثُ عَلَى نَفْسِهِ فِى الْمَرَضِ الَّذِىْ مَاتَ فِيْهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ

‘নবী করীম (ছাঃ) যে রোগে মৃত্যুবরণ করেন সেই সময়ে তিনি নিজ দেহে ‘মু‘আবিবযাত (সূরা নাস ও ফালাক্ব) পড়ে ফুঁক দিতেন’।
(বুখারী হাদিস নং
৫৭৩৫)

★★★তাবীয’ (تَعْوِيْذٌ) আরবী শব্দ। ‘আউযুন’ (عَوْذٌ) মূলধাতু হ’তে উৎপন্ন। এটি একবচন। বহুবচনে ‘তা‘আবীয’ (تَعَاوِيْذٌ)।

★তাবিজ দেওয়া জায়েজ আছে যদি তা হয় কুরআন ও হাদিসের বাক্য দ্বারা এর বিপরীত কিছু নাজায়েজ।
তাবিজ ও তামিমা এক নয়,তাবিজ জায়েজ তামিমা না জায়েজ।

★★★শিরকী কথা, অস্পষ্ট বাক্য, কারো বানানো কোন মন্ত্র দ্বারা ঝড়-ফুঁক তাবিজ দেওয়াও অবৈধ। ইসলাম পরিপন্থী কথা ও কার্যাবলীর মাধ্যমে ঝাড়-ফুঁক করা নিষেধ।

★ইমাম মুনজিরি বলেন:

لتميمة: يقال:إنها خرزة كانوا يعلقونها، يرون أنها تدفع عنهم الآفات،

তামিমা বলা হয় ছোট ছোট পাথরকে, জাহেলি যুগে তারা লটকাতো এবং মনে করত এগুলো তাদের বিপদ থেকে রক্ষা করবে। আত তারগিব ওয়াত তারহিব: ৪/২৫০।

★ইমাম আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ুতি রাহি. বলেন:

التَّمَائِمِ جَمْعُ تَمِيمَةٍ وَهِيَ خَرَزَاتٌ كَانَتِ الْعَرَبُ تُعَلِّقُهَا عَلَى أَوْلَادِهِمْ يَتَّقُونَ بِهَا الْعَيْنَ فِي زَعْمِهِمْ فَأَبْطَلَهُ الْإِسْلَامُ

অর্থাৎ তামিমা বলা ছোট পাথরকে, বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য জাহেলি যুগের লোকজন যা লটকিয়ে রাখত। ইসলাম সেটাকে বাতিল করে দিয়েছে। হাশিয়াতুস সুয়ুতি আলা সুনানিন নাসায়ি: ৮/১৩৯

অর্থাৎ তামিমা হলো ছোট ছোট পাথর, যেগুলো তারা লটকিয়ে রাখত এবং মনে করতে, এগুলো তাদের বিপদ দূর করে। এ আকিদা মূর্খতা এবং ভ্রষ্টতাপূর্ণ। কারণ, বিপদ থেকে বাঁচানোর এবং বিপদ দূর করার একমাত্র মালিক হলেন আল্লাহ। মাআলিমুস সুনান: ৪/২২০।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

শিবালয়ের মাচাইন মাঠে উত্তরা ও শিবালয় এসএসসি ৯৮ ব্যাচের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত

ইসলামের দৃষ্টিতে তাবিজ ও ঝাড়-ফুঁক

প্রকাশের সময়ঃ ০৩:৪৭:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

 

✍️মাওলানা শেখ মিলাদ হোসাইন সিদ্দিকীঃ ★আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

,يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِيْنَ-

‘হে মানুষ! তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমাদের কাছে এসেছে নছীহত এবং তোমাদের অন্তরে যা আছে তার নিরাময়। আর মুমিনদের জন্য সঠিক পথের দিশা ও রহমত’ (ইউনুস ১০/৫৭)। অতএব কুরআন হ’ল সকল প্রকার মানসিক ও শারীরিক রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য দানকারী।

ঝাড়-ফুঁককে আরবীতে ‘রুকইয়া’ বলে। ‘রুক্বইয়া’ হ’ল যার দ্বারা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রর্থনা করা হয় এবং আরোগ্যের জন্য রোগীকে ফুঁক দেওয়া হয়।

ঝাড়-ফুঁক শরী‘আত সম্মত একটি প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থা। রাসূল (ছাঃ) নিজেও ঝাড়-ফুঁক করতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন,

أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَنْفُثُ عَلَى نَفْسِهِ فِى الْمَرَضِ الَّذِىْ مَاتَ فِيْهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ

‘নবী করীম (ছাঃ) যে রোগে মৃত্যুবরণ করেন সেই সময়ে তিনি নিজ দেহে ‘মু‘আবিবযাত (সূরা নাস ও ফালাক্ব) পড়ে ফুঁক দিতেন’।
(বুখারী হাদিস নং
৫৭৩৫)

★★★তাবীয’ (تَعْوِيْذٌ) আরবী শব্দ। ‘আউযুন’ (عَوْذٌ) মূলধাতু হ’তে উৎপন্ন। এটি একবচন। বহুবচনে ‘তা‘আবীয’ (تَعَاوِيْذٌ)।

★তাবিজ দেওয়া জায়েজ আছে যদি তা হয় কুরআন ও হাদিসের বাক্য দ্বারা এর বিপরীত কিছু নাজায়েজ।
তাবিজ ও তামিমা এক নয়,তাবিজ জায়েজ তামিমা না জায়েজ।

★★★শিরকী কথা, অস্পষ্ট বাক্য, কারো বানানো কোন মন্ত্র দ্বারা ঝড়-ফুঁক তাবিজ দেওয়াও অবৈধ। ইসলাম পরিপন্থী কথা ও কার্যাবলীর মাধ্যমে ঝাড়-ফুঁক করা নিষেধ।

★ইমাম মুনজিরি বলেন:

لتميمة: يقال:إنها خرزة كانوا يعلقونها، يرون أنها تدفع عنهم الآفات،

তামিমা বলা হয় ছোট ছোট পাথরকে, জাহেলি যুগে তারা লটকাতো এবং মনে করত এগুলো তাদের বিপদ থেকে রক্ষা করবে। আত তারগিব ওয়াত তারহিব: ৪/২৫০।

★ইমাম আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ুতি রাহি. বলেন:

التَّمَائِمِ جَمْعُ تَمِيمَةٍ وَهِيَ خَرَزَاتٌ كَانَتِ الْعَرَبُ تُعَلِّقُهَا عَلَى أَوْلَادِهِمْ يَتَّقُونَ بِهَا الْعَيْنَ فِي زَعْمِهِمْ فَأَبْطَلَهُ الْإِسْلَامُ

অর্থাৎ তামিমা বলা ছোট পাথরকে, বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য জাহেলি যুগের লোকজন যা লটকিয়ে রাখত। ইসলাম সেটাকে বাতিল করে দিয়েছে। হাশিয়াতুস সুয়ুতি আলা সুনানিন নাসায়ি: ৮/১৩৯

অর্থাৎ তামিমা হলো ছোট ছোট পাথর, যেগুলো তারা লটকিয়ে রাখত এবং মনে করতে, এগুলো তাদের বিপদ দূর করে। এ আকিদা মূর্খতা এবং ভ্রষ্টতাপূর্ণ। কারণ, বিপদ থেকে বাঁচানোর এবং বিপদ দূর করার একমাত্র মালিক হলেন আল্লাহ। মাআলিমুস সুনান: ৪/২২০।