সাভারঃ আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবিতে দলিল লেখকদের আন্দোলন ও বিক্ষোভের কারণে আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সৃষ্টি হয়েছে অনেকটা অচলাবস্থা। ব্যাহত হচ্ছে জমি কেনাবেচার কার্যক্রম। ফলে জমির দলিল সম্পাদন করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। একইসঙ্গে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।
সাব -রেজিস্ট্রি অফিসের এমন বেহাল অবস্থার কারণ জানতে চাইলে আশুলিয়া সাব- রেজিস্ট্রি অফিসের সাব- রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেল বলেন, আশুলিয়া দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে কিছুদিন ধরে আমার পদত্যাগ দাবি করে আসছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে চাই আমার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি আইন অনুযায়ী কাজ করছি। ফলে কিছু সুবিধাভোগী দলিল লেখকরা আমার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা না পেয়ে আশুলিয়া দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেনের ইন্ধনে সাধারণ দলিল লেখকদের বিভ্রান্ত করছে এবং নষ্ট করা হচ্ছে কর্মপরিবেশ । জোর করে বন্ধ রাখা হয়েছে দলিল লেখকদের কক্ষ। পে-অর্ডার করতেও বাধা প্রদান করছে। যারা স্বউদ্যোগে অন্যত্র থেকে দলিল লিখে সম্পাদর করতে আসছেন তাদের দেখানো হচ্ছে ভয় ভীতি এমনকি আমির হোসেন নামে একজন ব্যাংক কর্মকর্তাকে মেরে আহত করা হয়েছে যা ইতিমধ্যে আশুলিয়া থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত মব সৃষ্টির মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশে এমন পরিস্থিতি চলতে পারে না। কিছু সুবিধাভোগী দলিল লেখকরা চরম স্বেচ্ছাচারিতায় মেতেছেন, ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব এবং সাধারণ সেবা প্রত্যাশীরা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের ন্যায্য সেবা প্রাপ্তি থেকে। এমন অবস্থা সূত্রপাতের পেছনে মূল কারন হচ্ছে, আশুলিয়া দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন ভূয়া খাজনা দিয়ে একটি দলিল সম্পাদন করাতে চেয়েছিলেন। আমি তা গ্রহণ করিনি। এছাড়াও সরকারি রেভিনিউ উৎস কর ৮০ হাজার টাকা থেকে মাত্র ২০ হাজার টাকা দেয়ার অন্যায় আবদারসহ ভ্রম সংশোধনের নামে আরএস দাগ নাম্বার পরিবর্তন করে দলিল সম্পাদনের জন্য অন্যায় ভাবে চাপ দেওয়া হয়েছিলো আমাকে। পাশাপাশি খাজনা খারিজ ছাড়া দলিল সম্পাদনের জন্যও আমাকে প্রেসারাইজ করা হয়েছিলো। কিন্তু আমি কোন চাপের কাছে মাথা নত করিনি। সরকার আমাকে এখানে বসিয়েছে, সরকারি স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সুতরাং কোন চাপই আমাকে আমার দায়িত্ব থেকে পিছু হটাতে পারবে না। আর কারও অন্যায় দাবিতে পদত্যাগ করার প্রশ্নই আসে না। আমি এখানে থাকবো কিনা এসব বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আশুলিয়া দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির আহবায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, সাব রেজিস্ট্রার খাইরুল বাসার পাভেল একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আমরা তার অপসারণ চাই।
গত ১৭ জুন থেকে চলমান এ অচলাবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জমির ক্রেতা-বিক্রেতা ও সচেতন মহল। দ্রুত সমাধান না হলে এ সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুক। প্রকাশক কর্তৃক বি,এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবী সার্কুলার রোড , ঢাকা- ১২০৩ থেকে মুদ্রিত ও ২ আর কে মিশন রোড (৫ম তলা) থেকে প্রকাশিত।
© All rights reserved © 2017 Alokito Kantho