০৭:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আরিচায় যমুনা চ্যানেল হতে বছরে দুই কোটি টাকা চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগ

  • রফিকুল ইসলাম
  • প্রকাশের সময়ঃ ০৩:৫৮:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

 

মানিকগঞ্জঃ শিবালয়ের আরিচা-পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়ার যমুনা নদীর চ্যানেল হতে পাবনার নগরবাড়ি নটাখোলা এবং বাঘাবাড়ী নৌ চ্যানেলে চলাচলরত বিভিন্ন মালবাহী নৌযান হতে ছাপানো টোপেনের মাধ্যমে চাঁদা তুলছে একটি চক্র। এমন অভিযোগ লিখিত আকারে পাওয়া গেছে। ছাপানো টোকেন রশিদ দিয়ে মালবাহী প্রতিটি কার্গো ও বাল্কহেড হতে প্রতিবার যাতায়াতের কারণে দুই হাজার হতে তিন হাজার এমনকি ক্ষেত্রবিশেষ ৫০০০ টাকা করে চাঁদা তুলছে চক্রটি। এভাবে বছরে দুই কোটি টাকার বেশি চাঁদা তোলা হচ্ছে এই নৌ চ্যানেল হতে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। এভাবে চাঁদা তোলা অব্যাহত থাকলে এই চ্যানেলে চলাচলরত সকল মালবাহী নৌযান বন্ধ হয়ে যাওয়া আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন দাবি করেছে চ্যানেলে চাদাবাজী বন্ধ না হলে তারা উক্ত চ্যানেলে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেবে। উক্ত ফেডারেশন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চাদাবাজীর প্রতিকার চেয়ে একাধিক অভিযোগ করেছে লিখিত আকারে। যার কপি এই প্রতিনিধির হাতে এসে পৌঁছেছে। অভিযোগের একাধিক চিঠি  ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর দেয়া হলেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চাঁদা তোলা অব্যাহত রয়েছে। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।

বিগত ২০ দিন যাবত নদীপথে ও বিভিন্ন দপ্তরে সরেজমিন খোঁজখবর নিয়ে এবং বিভিন্ন কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে,বিগত পহেলা জুলাই ২০২৫ তারিখ হতে ৩০ শে জুন ২০২৬ তারিখ পর্যন্ত গোয়ালন্দ পাকশী নৌ চ্যানেল হয়ে চলাচলকারী নৌযান হতে চ্যানেল চার্জ আদায়ের জন্য গ্রুপ অন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডকে ইদারা প্রদান করে বিআইডব্লিউটিএ। সূত্র: বিআইডব্লিউটিএ আরিচা দপ্তর এর স্মারক নঙ-১৮.৭২০.০০৫২.০০০.০০০.২৪৫.২০১৯/৪৫২ তারিখ-২৬-০৬-২০২৫ খ্রিঃ। ইজারার শর্ত অনুযায়ী গোয়ালন্দ- পাকশী নৌ চ্যানেল হয়ে চলাচলকারী নৌযান হতে চ্যানেল চার্জ আদায় করবে উক্ত ইজারাদার প্রতিষ্ঠান গ্রুপঅন সার্ভিসেস প্রাঃ লিঃ। প্রতিটি নৌযান হতে টনপ্রতি আট টাকা এবং বালু হলে ফুটপতি পঁচিশ পয়সা হারে চার্জ আদায় করার শর্ত রয়েছে উক্ত চুক্তিপত্রে। কিন্তু ইজারাদার নির্দিষ্ট পদ্মা নদীর চ্যানেল ছাড়াও  যমুনার চ্যানেলে চলাচলরত মালবাহী নৌযান হতেও সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এবং ফেডারেশনের দাবি অনুযায়ী টি এর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে টোকেনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছে। এ বিষয়ে যমুনা চ্যানেলে চলাচলকারী সুকানিদের সাথে কথা বলে চাঁদা আদায়ের সত্যতা পাওয়া গেছে। এমবি উড়াল পাখির সুকানি মোহাম্মদ ফজলু শেখ, এমবি মহারাজার সুকানি মোঃ বজলুল শেখ, এমবি আল আয়াতের সুকানি মিন্টু ফকির, এমবি মল্লিকের চর এর সুকানি শুক্কুর ফকির, এমবি ওমর রতনের সুকানি মোহাম্মদ মদিনা মোল্লা, এমবি উত্তরা-৩ এর সুকানি মোঃ আব্দুল্লাহ, এমবি সামীর মোহাম্মদ এর সুকানি মোঃ সাইফুল মোল্লা, এমবি জমজম এর সুকানি মোঃ আবুল বাশার, এমবি তাওহীদ ফারিরার সুকানি মোঃ হালিম মোল্লা, এমবি ফ্রেন্ড সার্কেল এর সুকানি মোঃ এমদাদুল,এমবি রায়হান রিফাত এর সুকানি মোঃ সেলিম, এমবি সিকদার আনআজ এর সুকানি মোঃ হাফিজুর রহমান এবং মোঃ বাহার মাস্টার যমুনা চ্যানেলে চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, ছাপানো টোকেনের মাধ্যমে টাকার অংক বসিয়ে চাঁদা দিতে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তাদেরকে অস্ত্র ঠেকিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন। উক্ত টোকেনে পরিবহন ও মালামালের ধরন এবং ওজন উল্লেখ ছাড়াই শুধুমাত্র টাকার অংক বসানো হয়েছে। এমন কিছু টোকেন পাওয়া গেছে। যেখানে নৌ চ্যানেলের কথাও উল্লেখ নেই।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আরিফুল আলম বলেছেন, আমরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে। আমাদের ফেডারেশন চাদাবাজি হতে মুক্তির দাবী নিয়ে এবং এর প্রতিকার চেয়ে নৌ উপদেষ্টা সহ বিআইডব্লিউটিএ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করেছে। কিন্তু এখনো চাদাবাজী বন্ধ হয়নি। তবে আমরা বিশ্বাস করি প্রশাসন কঠোর হস্তে চাঁদাবাজি দমন করবে। তারা আরও বলেছেন, এই চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে অচিরেই দৌলতদিয়া- নগরবাড়ি- নটাখোলা- বাঘাবাড়ী নৌ চ্যানেলে চলাচলরত মালবাহী কার্গো,বাল্কহেডসহ সারা দেশের সমস্ত কার্গো,বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দেয়া হবে ফেডারেশনের পক্ষ হতে।

এসব বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত গ্রুপ অন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের ইজারাদার মোঃ নাসির উদ্দিনকে একাধিকবার কল করে, হোয়াটসঅ্যাপ করে এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। একাধিকবার তার নাম্বারে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি বা কোন মেসেজের উত্তর দেননি।

এই বিষয়ে ফরিদপুর অঞ্চলের নৌ পুলিশের এসপি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন,আমরা জেনেছি নৌ চ্যানেলটি বিআইডব্লিউটিএ ইজারা দিয়েছে। তারাই নৌ-রুট এবং মালের রেট ভালো বলতে পারবে। তবে চাঁদাবাজির এমন একটি অভিযোগও পেয়েছি। নির্দিষ্ট নৌ চ্যানেলের বাইরে অন্য চ্যানেলে কোনরকম চাঁদাবাজি বরদাস করা হবে না বলেও তিনি বলেছেন। প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে চাদাবাজী প্রমাণিত হলে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেব এবং কঠোর হস্তে চাদাবাজী দমন করা হবে।

একই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর বন্দর ও পরিবহনের পরিচালক আরিফ হাসনাত এর সাথে কথা বললে তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে আপনি অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কিছু প্রশ্ন লিখে তার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠালে তিনি সেসব প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি।

একই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা আঞ্চলিক শাখার বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা সেলিম শেখ বলেছেন, আমি বর্তমানে অসুস্থ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছুটিতে আছি। নতুন কেউ দুই-একদিনের ভিতরেই জয়েন করলে তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেছেন, যমুনার নটাখোলা নগরবাড়ি বাঘাবাড়ী নৌ চ্যানেলে প্রতিবছর কম বেশি সাত হাজার মালবাহী নৌযান চলাচল করে। যেসব নৌ যানে তেল,কয়লা,পাথর,সিমেন্ট, চাউল ও বালুসহ নানাবিধ পণ্য পরিবহন করা হয়। এ বিষয়টি হিসাবে নিয়ে দেখা গেছে প্রতিটি নৌযান হতে গড়ে তিন হাজার টাকা করে চাঁদা তুললেও বছরে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা উঠে এই চ্যানেল হতে।

এদিকে নৌ পথে চাদাবাজী বন্ধের দাবীতে বাংলাদেশ নৌ যান শ্রমিক ফেডারেশন শ্রমিক বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করেছেন বলে জানিয়েছেন ফেডারেশনের অফিস সহকারী মোঃ বাহার মাস্টার।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

জুলাই গনঅভ্যুত্থানে মানিকগঞ্জে শহীদ রফিকুল ইসলামের নামে নির্মিত স্মৃতি ফলকে ‘শ্রমজীবী’ লেখায় বিএনপির প্রতিবাদ

আরিচায় যমুনা চ্যানেল হতে বছরে দুই কোটি টাকা চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগ

প্রকাশের সময়ঃ ০৩:৫৮:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

 

মানিকগঞ্জঃ শিবালয়ের আরিচা-পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়ার যমুনা নদীর চ্যানেল হতে পাবনার নগরবাড়ি নটাখোলা এবং বাঘাবাড়ী নৌ চ্যানেলে চলাচলরত বিভিন্ন মালবাহী নৌযান হতে ছাপানো টোপেনের মাধ্যমে চাঁদা তুলছে একটি চক্র। এমন অভিযোগ লিখিত আকারে পাওয়া গেছে। ছাপানো টোকেন রশিদ দিয়ে মালবাহী প্রতিটি কার্গো ও বাল্কহেড হতে প্রতিবার যাতায়াতের কারণে দুই হাজার হতে তিন হাজার এমনকি ক্ষেত্রবিশেষ ৫০০০ টাকা করে চাঁদা তুলছে চক্রটি। এভাবে বছরে দুই কোটি টাকার বেশি চাঁদা তোলা হচ্ছে এই নৌ চ্যানেল হতে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। এভাবে চাঁদা তোলা অব্যাহত থাকলে এই চ্যানেলে চলাচলরত সকল মালবাহী নৌযান বন্ধ হয়ে যাওয়া আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন দাবি করেছে চ্যানেলে চাদাবাজী বন্ধ না হলে তারা উক্ত চ্যানেলে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেবে। উক্ত ফেডারেশন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চাদাবাজীর প্রতিকার চেয়ে একাধিক অভিযোগ করেছে লিখিত আকারে। যার কপি এই প্রতিনিধির হাতে এসে পৌঁছেছে। অভিযোগের একাধিক চিঠি  ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর দেয়া হলেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চাঁদা তোলা অব্যাহত রয়েছে। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।

বিগত ২০ দিন যাবত নদীপথে ও বিভিন্ন দপ্তরে সরেজমিন খোঁজখবর নিয়ে এবং বিভিন্ন কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে,বিগত পহেলা জুলাই ২০২৫ তারিখ হতে ৩০ শে জুন ২০২৬ তারিখ পর্যন্ত গোয়ালন্দ পাকশী নৌ চ্যানেল হয়ে চলাচলকারী নৌযান হতে চ্যানেল চার্জ আদায়ের জন্য গ্রুপ অন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডকে ইদারা প্রদান করে বিআইডব্লিউটিএ। সূত্র: বিআইডব্লিউটিএ আরিচা দপ্তর এর স্মারক নঙ-১৮.৭২০.০০৫২.০০০.০০০.২৪৫.২০১৯/৪৫২ তারিখ-২৬-০৬-২০২৫ খ্রিঃ। ইজারার শর্ত অনুযায়ী গোয়ালন্দ- পাকশী নৌ চ্যানেল হয়ে চলাচলকারী নৌযান হতে চ্যানেল চার্জ আদায় করবে উক্ত ইজারাদার প্রতিষ্ঠান গ্রুপঅন সার্ভিসেস প্রাঃ লিঃ। প্রতিটি নৌযান হতে টনপ্রতি আট টাকা এবং বালু হলে ফুটপতি পঁচিশ পয়সা হারে চার্জ আদায় করার শর্ত রয়েছে উক্ত চুক্তিপত্রে। কিন্তু ইজারাদার নির্দিষ্ট পদ্মা নদীর চ্যানেল ছাড়াও  যমুনার চ্যানেলে চলাচলরত মালবাহী নৌযান হতেও সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এবং ফেডারেশনের দাবি অনুযায়ী টি এর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে টোকেনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছে। এ বিষয়ে যমুনা চ্যানেলে চলাচলকারী সুকানিদের সাথে কথা বলে চাঁদা আদায়ের সত্যতা পাওয়া গেছে। এমবি উড়াল পাখির সুকানি মোহাম্মদ ফজলু শেখ, এমবি মহারাজার সুকানি মোঃ বজলুল শেখ, এমবি আল আয়াতের সুকানি মিন্টু ফকির, এমবি মল্লিকের চর এর সুকানি শুক্কুর ফকির, এমবি ওমর রতনের সুকানি মোহাম্মদ মদিনা মোল্লা, এমবি উত্তরা-৩ এর সুকানি মোঃ আব্দুল্লাহ, এমবি সামীর মোহাম্মদ এর সুকানি মোঃ সাইফুল মোল্লা, এমবি জমজম এর সুকানি মোঃ আবুল বাশার, এমবি তাওহীদ ফারিরার সুকানি মোঃ হালিম মোল্লা, এমবি ফ্রেন্ড সার্কেল এর সুকানি মোঃ এমদাদুল,এমবি রায়হান রিফাত এর সুকানি মোঃ সেলিম, এমবি সিকদার আনআজ এর সুকানি মোঃ হাফিজুর রহমান এবং মোঃ বাহার মাস্টার যমুনা চ্যানেলে চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, ছাপানো টোকেনের মাধ্যমে টাকার অংক বসিয়ে চাঁদা দিতে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তাদেরকে অস্ত্র ঠেকিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন। উক্ত টোকেনে পরিবহন ও মালামালের ধরন এবং ওজন উল্লেখ ছাড়াই শুধুমাত্র টাকার অংক বসানো হয়েছে। এমন কিছু টোকেন পাওয়া গেছে। যেখানে নৌ চ্যানেলের কথাও উল্লেখ নেই।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আরিফুল আলম বলেছেন, আমরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে। আমাদের ফেডারেশন চাদাবাজি হতে মুক্তির দাবী নিয়ে এবং এর প্রতিকার চেয়ে নৌ উপদেষ্টা সহ বিআইডব্লিউটিএ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করেছে। কিন্তু এখনো চাদাবাজী বন্ধ হয়নি। তবে আমরা বিশ্বাস করি প্রশাসন কঠোর হস্তে চাঁদাবাজি দমন করবে। তারা আরও বলেছেন, এই চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে অচিরেই দৌলতদিয়া- নগরবাড়ি- নটাখোলা- বাঘাবাড়ী নৌ চ্যানেলে চলাচলরত মালবাহী কার্গো,বাল্কহেডসহ সারা দেশের সমস্ত কার্গো,বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দেয়া হবে ফেডারেশনের পক্ষ হতে।

এসব বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত গ্রুপ অন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের ইজারাদার মোঃ নাসির উদ্দিনকে একাধিকবার কল করে, হোয়াটসঅ্যাপ করে এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। একাধিকবার তার নাম্বারে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি বা কোন মেসেজের উত্তর দেননি।

এই বিষয়ে ফরিদপুর অঞ্চলের নৌ পুলিশের এসপি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন,আমরা জেনেছি নৌ চ্যানেলটি বিআইডব্লিউটিএ ইজারা দিয়েছে। তারাই নৌ-রুট এবং মালের রেট ভালো বলতে পারবে। তবে চাঁদাবাজির এমন একটি অভিযোগও পেয়েছি। নির্দিষ্ট নৌ চ্যানেলের বাইরে অন্য চ্যানেলে কোনরকম চাঁদাবাজি বরদাস করা হবে না বলেও তিনি বলেছেন। প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে চাদাবাজী প্রমাণিত হলে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেব এবং কঠোর হস্তে চাদাবাজী দমন করা হবে।

একই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর বন্দর ও পরিবহনের পরিচালক আরিফ হাসনাত এর সাথে কথা বললে তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে আপনি অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কিছু প্রশ্ন লিখে তার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠালে তিনি সেসব প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি।

একই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা আঞ্চলিক শাখার বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা সেলিম শেখ বলেছেন, আমি বর্তমানে অসুস্থ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছুটিতে আছি। নতুন কেউ দুই-একদিনের ভিতরেই জয়েন করলে তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেছেন, যমুনার নটাখোলা নগরবাড়ি বাঘাবাড়ী নৌ চ্যানেলে প্রতিবছর কম বেশি সাত হাজার মালবাহী নৌযান চলাচল করে। যেসব নৌ যানে তেল,কয়লা,পাথর,সিমেন্ট, চাউল ও বালুসহ নানাবিধ পণ্য পরিবহন করা হয়। এ বিষয়টি হিসাবে নিয়ে দেখা গেছে প্রতিটি নৌযান হতে গড়ে তিন হাজার টাকা করে চাঁদা তুললেও বছরে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা উঠে এই চ্যানেল হতে।

এদিকে নৌ পথে চাদাবাজী বন্ধের দাবীতে বাংলাদেশ নৌ যান শ্রমিক ফেডারেশন শ্রমিক বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করেছেন বলে জানিয়েছেন ফেডারেশনের অফিস সহকারী মোঃ বাহার মাস্টার।