বিশেষ প্রতিনিধি
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় এক বিএনপির নেতা ও তার পরিবারের ওপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠা সুবিধাবাদী আঃ মান্নান স্বপন। হামলার শিকার শহিদুল ইসলাম খোকন উপজেলা আসমা ইউনিয়ন  বিএনপির সহ সভাপতি। তৃনমূলের এই পরিক্ষিত কর্মী বিগত দিনে মিথ্যা মামলা হামলার শিকার হয়ে দীর্ঘ দিন জেল হাজতে ছিল বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বাড়ি যাওয়ার সময় উপজেলার গুমুরিয়া গ্রামের আঃ মান্নান স্বপন ও তার দল-বল শহিদুল ইসলাম খোকনের ছোট ভাই তাজুল ইসলামের পথরোধ করে তার ওপর আক্রমণ শুরু করে। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে আঃ মান্নানের লোকজন ধারালো অস্ত্র, রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপরও ঝাপিয়ে পড়ে। এতে চান মিয়া, আঃ রহিম,আরিফ, আঃ রাশিদ, তাজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম খোকন সহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। মারামারির সময় আঃ মান্নানের পরিবারের কয়েকজনও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

এই ব্যপারে ৮ ডিসেম্বর বারহাট্টা থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে বলে জানিয়েছে বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান।

শহিদুল ইসলাম খোকন বলেন, ১৭ বছর আওয়ামী লীগ কর্তৃক মিথ্যা মামলা, জেল, জুলুম নির্যাতনের পর এখনও আমার ও আমার পরিবারের ওপর অত্যাচার কমেনি। তিনি বলেন বিগত দিনে যারা আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে আমাকে নির্যাতন নিপিড়ন করতো আজ তারাই বিএনপি সেজে আমার ও আমার পরিবারের ওপর তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। নিজের ভাই, চাচা, ভাতিজা সহ ৬ জন কে গুরুতর আহত করে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও হুমকির মধ্যে রেখেছে। আমি বর্তমানে খুব আতংকে আছি, আমার ভাই ভাতিজাকে বারহাট্টা হাসপাতাল থেকে আগেই রেফার্ড করেছিলো কিন্তু  টাকার জন্য আজকে নিয়ে  ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করছি। আমার ভাই ভাতিজার অপারেশন লাগবে। আমি খুব হতাশার মধ্যে আছি।

আঃ মান্নান স্বপন বলেন, আমার পূর্ব থেকে এদের সাথে একটি স্কুল নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। গত ২৪ নভেম্বর আমার নামে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছে। এই ব্যাপারে আমার ভাতিজা নূর আলম তাকে জিজ্ঞেস করলে উভয়ের মধ্যে কিল ঘুসাঘুসি শুরু হয়। আমাদের একজন রুগির মাথায় ২৬ টি সেলাই লেগেছে।

বারহাট্টা উপজেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি বাবুল মিয়া বলেন, শহিদুল ইসলাম খোকন বারবার কারানির্যাতনের শিকার। শুক্রবারে তার ও তার পরিবারের ওপর পরিকল্পিত হামলার নিন্দা জানাই। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের দালাল আঃ মান্নান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানাই। আঃ মান্নান যে আওয়ামী লীগের দালাল সেই প্রমান আমার কাছে আছে। সে স্বৈরাচার হাসিনার দোসর ওবায়দুল কাদেরের সুস্থতা কামনায় ফেইসবুকে পোস্ট দেয়া থেকে শুরু করে বেশ কিছু প্রমান আমার কাছে আছে।

বারহাট্টা সরকারি কলেজ ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান বারহাট্টা উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আঃ কাদির খান বলেন,আমি পঁচিশ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতি করি। শহিদুল ইসলাম খোকন দলের ত্যাগী নেতাদের একজন। আঃ মান্নান বিগত দিনে আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ সহ অর্থ সহায়তা দিয়ে বিএনপিকে কুন টাঁসা করে রাখতো। সে একজন স্বার্থান্বেষী লোক। তার আওয়ামী লীগ প্রমাণের জন্য আমার কাছে অনেক প্রমান রয়েছে। কাজেই দলের নাম বিক্রি করে চলার সুযোগ নেই । শহিদুল ইসলাম খোকনের ওপর অতর্কিত হামলার নিন্দা জানাই।

বারহাট্টা থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুল হাসান বলেন, এই ব্যপারে উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে। শহিদুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে ৮ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামিদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। অন্য পক্ষ এখনও অভিযোগ দেয় নি।