১১:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারীশিক্ষা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করায় আফগানিস্তান ছাড়তে হলো তালেবানের মন্ত্রীর

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ১২:০৪:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

আলোকিত কন্ঠ ডেস্কঃ আফগানিস্তানে নারীদের পড়াশোনায় তালেবান সরকারের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আফগানিস্তান ত্যাগ করে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই শহরে আশ্রয় নিয়েছেন।

গত ২০ জানুয়ারি আফগানিস্তান-পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী খোস্ত প্রদেশে একটি ‘গ্র্যাজুয়েশন’ অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই। বক্তৃতায় তিনি কন্যাশিশুদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা এবং নারীদের উচ্চশিক্ষায় তালেবান সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেন।

বক্তৃতায় মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই বলেছিলেন, ‘এটার [নারীশিক্ষায় নিষেধাজ্ঞার] জন্য কোনো অজুহাত দেওয়া যায় না, বর্তমানেও না এবং ভবিষ্যতেও না। আমরা দুই কোটি মানুষের প্রতি অন্যায় করছি।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর জমানায় নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য জ্ঞানের দরজা খোলা ছিল। [তখন] সেখানে এত অসাধারণ সব নারী ছিলেন যে আমি যদি তাঁদের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে যাই, তাহলে অনেক সময় লাগবে।’

বক্তৃতায় মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদারও সমালোচনা করেন। জানা গেছে, এই বক্তৃতা ও নিজের সমালোচনার কথা শুনে মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাইকে গ্রেপ্তার করতে এবং তাঁর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। এই পরিস্থিতিতে মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই আফগানিস্তান ত্যাগ করেন।

স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দুবাইয়ের উদ্দেশে আফগানিস্তান ছাড়ার কথা নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই। তবে শারীরিক সমস্যার কারণেই তিনি দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি করেছেন। এ বিষয়ে জানতে তালেবানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আফগানিস্তানে ২০২১ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করে তালেবান। এরপর থেকে নারীদের শিক্ষা, চাকরি, চলাফেরা এবং জনপরিসরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।

গত মাসে হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ও আফগানিস্তানের প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম খান। বৈষম্যের মাধ্যমে নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত আইসিসির আদালতে করিম খান এই আবেদন করেছেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

গাজায় ইসরায়েলি হামলা, একদিনে নিহত ৮০

নারীশিক্ষা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করায় আফগানিস্তান ছাড়তে হলো তালেবানের মন্ত্রীর

প্রকাশের সময়ঃ ১২:০৪:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আলোকিত কন্ঠ ডেস্কঃ আফগানিস্তানে নারীদের পড়াশোনায় তালেবান সরকারের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আফগানিস্তান ত্যাগ করে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই শহরে আশ্রয় নিয়েছেন।

গত ২০ জানুয়ারি আফগানিস্তান-পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী খোস্ত প্রদেশে একটি ‘গ্র্যাজুয়েশন’ অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই। বক্তৃতায় তিনি কন্যাশিশুদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা এবং নারীদের উচ্চশিক্ষায় তালেবান সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেন।

বক্তৃতায় মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই বলেছিলেন, ‘এটার [নারীশিক্ষায় নিষেধাজ্ঞার] জন্য কোনো অজুহাত দেওয়া যায় না, বর্তমানেও না এবং ভবিষ্যতেও না। আমরা দুই কোটি মানুষের প্রতি অন্যায় করছি।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর জমানায় নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য জ্ঞানের দরজা খোলা ছিল। [তখন] সেখানে এত অসাধারণ সব নারী ছিলেন যে আমি যদি তাঁদের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে যাই, তাহলে অনেক সময় লাগবে।’

বক্তৃতায় মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদারও সমালোচনা করেন। জানা গেছে, এই বক্তৃতা ও নিজের সমালোচনার কথা শুনে মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাইকে গ্রেপ্তার করতে এবং তাঁর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। এই পরিস্থিতিতে মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই আফগানিস্তান ত্যাগ করেন।

স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দুবাইয়ের উদ্দেশে আফগানিস্তান ছাড়ার কথা নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই। তবে শারীরিক সমস্যার কারণেই তিনি দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি করেছেন। এ বিষয়ে জানতে তালেবানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আফগানিস্তানে ২০২১ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করে তালেবান। এরপর থেকে নারীদের শিক্ষা, চাকরি, চলাফেরা এবং জনপরিসরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।

গত মাসে হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ও আফগানিস্তানের প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম খান। বৈষম্যের মাধ্যমে নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত আইসিসির আদালতে করিম খান এই আবেদন করেছেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান