
ঢাকাঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়নপ্রাপ্তির জন্য তিনটি যোগ্যতাকে প্রধান মানদণ্ড হিসেবে নির্ধারণ করেছে। দলীয় সূত্র বলছে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সম্ভাব্য নির্বাচন সামনে রেখে দলটি পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে।
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রার্থী মনোনয়নে তিনটি যোগ্যতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে—
(১) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে ত্যাগ ও সংগ্রাম,
(২) ব্যক্তিগত জীবনে সততা ও সুনাম, এবং
(৩) নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়তা ও জনসম্পৃক্ততা।
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এবার মনোনয়নে তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হতে পারে। তবে নবীন ও অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ তালিকা প্রস্তুত করা হবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারের একাধিক সদস্যও নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। পাশাপাশি, বিগত ১৫ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রামে বিএনপির পাশে থাকা মিত্র দলগুলোকেও কিছু আসনে ছাড় দেওয়া হতে পারে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যে একাধিক জরিপ চালিয়েছেন, আরও জরিপও চলমান রয়েছে। জরিপে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই করা হবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবে পার্লামেন্টারি বোর্ড এবং একক প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে।
বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, অতীতের মতো এক আসনে একাধিক প্রার্থীকে চিঠি দেওয়া হবে না। এবার শুধুমাত্র যোগ্য, ত্যাগী, সৎ ও জনপ্রিয় প্রার্থীরাই মনোনয়ন পাবেন। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে, কিংবা মাঠে জনপ্রিয়তা নেই, তাদের মনোনয়ন দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “২০১৮ সালের মতো এবার আর এক আসনে একাধিক প্রার্থী হবেন না। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার একক প্রার্থীই নির্ধারণ করা হবে।”
আরেক সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, “দলের জন্য কে কতটা ত্যাগ করেছেন, কে নিঃস্বার্থভাবে দলকে সেবা দিয়েছেন—সেই মূল্যায়ন করা হবে। যোগ্যরা উঠে আসবেনই।”
নেতারা আরও জানিয়েছেন, মনোনয়ন তালিকায় থাকবে চমক। কিছু আসনে এমন ব্যক্তিদের প্রার্থী করা হতে পারে, যাদের নাম অনেকেই কল্পনা করেন না। আবার কিছু সিনিয়র নেতাও মনোনয়ন হারাতে পারেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “বিএনপি সবসময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। প্রার্থী মূল্যায়নের ক্ষেত্রে দলের প্রতি আনুগত্য, ত্যাগ ও জনসম্পৃক্ততা—এই তিনটি বিষয়কেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।”