
শেরপুরঃ শেরপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলামের গণসংযোগে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৫ অক্টোবর শনিবার বিকালে শহরের মাধবপুরস্থ উৎসব কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে গণসংযোগে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাফিজুর রহমান লিখিত বক্তব্যে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, শেরপুর-১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলামের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে গতকাল ২৪ অক্টোবর শুক্রবার সদর উপজেলার ১০নং চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মী নিয়ে ভোটার গণসংযোগ চলছিল। পূর্ব নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে গণসংযোগ শুরু হয়। ইউনিয়নের দিকপাড়ার একটি মসজিদে জু’মার নামাজ আদায় করে নেতাকর্মীরা ব্যাঙের মোড় থেকে চুনিয়ারচর প্রাইমারি স্কুল মাঠে পথসভায় যাওয়ার সময় ডাকপাড়া গ্রামে মিজানুর রহমান, লুৎফর রহমান তারেক, মামুনুর রশিদ, মাফিজুল ইসলাম, মুরাদ মিয়া, নূরীসহ ১০-১২জন সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে পথরোধ করে।
গণসংযোগে অংশগ্রহনকারী নেতাকর্মীরা আগাতে চাইলে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অর্তকিত সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে অন্তত: ২০ জন গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হন। আঘাতপ্রাপ্তদের মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির শেরপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি, শেরপুর সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর অর্থ সম্পাদক শফিউল আলম স্বপন ও জামায়াত নেতা রাকিবুল হাসান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন এবং বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী ফিরে যান।
তিনি আরো বলেন, হামলাকারী দলের সবাই নিজেদের বিএনপি নেতাকর্মী বলে দাবী করেন। উক্ত ঘটনার পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে আমাদের নেতাকর্মীদেরকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। অতপর পুলিশকে অবগত করা হয়। প্রশাসনের আসতে বিলম্ব হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হবার আশংকা দেখে নেতাকর্মীরা স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় স্থান ত্যাগ করেন। ভোটার গণসংযোগে এমন ন্যক্কারজনক হামলায় শেরপুরবাসী উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে। এতে আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এমতবস্থায় ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত সকলকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির আওতায় আনার জন্য ও নিবার্চনী কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।
জানা যায়, গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে দাবি করেন হামলাকারীরা বিএনপির কেউ নন। তিনি আরো অভিযোগ করেন যে, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জুম’আর নামাজে লাঠিসোটা নিয়ে মিটিং করেন এবং গণসংযোগে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের ডাকাত দলের সদস্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন। মসজিদে দেওয়া বক্তব্য এবং গণসংযোগ কার্যক্রম সোশ্যাল মিডিয়ায় আছে, বিজ্ঞ আইনজীবি ও রাজনীতিবিদকে তা দেখে নেওয়ার অনুরোধ করছি। আমরা এই ধরনের অশোভন মন্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সহায়ক মনে করছি। আমরা এ অবস্থায় বিএনপি নেতৃবৃন্দেরকে আহ্বান জানাই সন্ত্রাসীরা যদি বিএনপির কেউ না-ই হয়, তাহলে শেরপুরের নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে চিহ্নিত হামলাকারী সন্ত্রাসীদেরকে আইনের আওতায় আনতে সহযোগিতা করুন। পাশাপাশি প্রশাসন ও অন্যান্য সকল দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের শেরপুরের রাজনৈতিক পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য সহযোগিতা কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, এমতাবস্থায় দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি সামনে রেখে, আগামী নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ ও সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সন্ত্রাসীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান জামায়াতের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, শেরপুর -১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, নকলা- নালিতাবাড়ী ২ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া ভিপি, শ্রীবরদী- ঝিনাইগাতী ৩ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা নুরুজ্জামান বাদল প্রমূখ।
এসময় জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. আনোয়ার হোসাইন, সূরা সদস্য মাওলানা আব্দুল বাতেন, পৌর শহর জামায়াতের আমীর মাওলানা নুরুল আমীন, সেক্রেটারি ডা. হাসানুজ্জামান, সহকারী সেক্রেটারি প্রভাষক জাহিদ আনোয়ার সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
গণসচেতনতার অংশ হিসেবে, শেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ২৬ অক্টোবর রবিবার বিকাল ৪টায় শহরের খোয়ারপাড় মোড় থেকে থানা মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ঘোষণা করেছে দলটি।
শেরপুর প্রতিনিধিঃ 


















