০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শার্শায় বাগুড়ী-কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম

 

যশোরঃ যশোরের শার্শায় বাগুড়ী- কোটা সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ের নির্মানাধীন রড, বিভিন্ন মালামাল চুরি, রাতে বিদ্যালয়ের ছাদে জুয়ার বোর্ড বসিয়ে অর্থ উপার্জন ও বিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন নারী এনে অনৈতিক কার্যকলাপসহ নানা অভিযোগ দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগের ভিক্তিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তদন্তে চারটি অভিযোগের মধ্যে তিনটি প্রমাণিত হলেও অজানা কারণে তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন না করে’ স্বপদে বহাল রাখেছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের এমন কর্মকান্ডে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে ঐ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে।সম্প্রতি গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে এমন একটি খবর আসলে’ অনুসন্ধানে গিয়ে তার প্রমাণও মিলেছে।

সরোজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী কামরুজ্জামান যুবলীগ কর্মী হওয়ায় বিদ্যালয়ে রাতে নারী ও খদ্দের নিয়ে এসে অর্থ উপার্জন, জুয়ার বোর্ডসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকতো সে। আওয়ামী সরকার পতনের পর কিছুদিন বন্ধ রাখলেও পরে আবারও একই কর্মকাণ্ড চালাতে থাকলে এলাকাবাসী তাকে জুয়ার বোড চলাকালীন ধাওয়া দিলে সে পালিয়ে যায়। পরে তার অপসারণ চেয়ে ৪৮ জন অভিভাবক ও সচেতন ব্যক্তি সাক্ষরিত ওই বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক বরাবর অভিযোগ দেয়। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী কামরুজ্জামানের বিষয়ে অবহিত করলে’ তিনি উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেনকে আহ্বায়ক ও রবি শংকর দেওয়ান এবং হারুনুর রশিদকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির কাছে অভিযুক্ত কামরুজ্জামান সমস্ত অপরাধ স্বীকার করলেও এলাকার একটি স্বার্থনেষী মহলের তদবিরে মাত্র ২০ (বিশ) হাজার টাকা জরিমানা মাধ্যমে তাকে স্বপদে চাকরিতে বহাল করা হয়। তবে’ একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে দুইলক্ষ টাকার বিনিময়ে কামরুজ্জামানের সকল অপরাধ ধামাচাপা দিয়েছে একটি মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করেছে ওই দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী কামরুজ্জামান। তাদের প্ররোচনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা বানু এতসব জঘন্য অপরাধ করার পরেও তাকে বহাল তবিয়তে চাকরির সুযোগ করে দিয়েছেন।

অভিযুক্ত কামরুজ্জামান জানান, তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সত্য। তিনি ওই কাজে জড়িত ছিলেন বলে নিজে স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করলে এলাকাবাসী ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

বাগুড়ী-কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা খাতুন জানান, কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রায় সকল অভিযোগ সত্য প্রমানিত হয় এবং তদন্ত কমিটি কাছে সে নিজে তার অপরাধ স্বীকার করে। পরে এলাকাবাসীর অনুরোধে তাকে এবারের মতো ক্ষমা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা বানু জানান, কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আংশিক প্রমানিত হয়েছে এবং তাকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে বলে’ তদন্ত কিমিটি আমার কাছে রিপোর্ট জমা দেয়। তবে’ তার বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত করে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. কাজী নাজিব হাসান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই, তবে তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি জানবেন। তিনি আরো জানান, যদি ওই দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরীর বিরদ্ধে এসকল অভিযোগ প্রমানিত হয়’ তাহলে তাকে ক্ষমা করার সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত এবং মামলার সুপারিশ করা হবে বলে তিনি জানান।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

শ্রীবরদীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগ জব্দ ও জরিমানা আদায়

শার্শায় বাগুড়ী-কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম

প্রকাশের সময়ঃ ০৪:৫৫:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

যশোরঃ যশোরের শার্শায় বাগুড়ী- কোটা সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ের নির্মানাধীন রড, বিভিন্ন মালামাল চুরি, রাতে বিদ্যালয়ের ছাদে জুয়ার বোর্ড বসিয়ে অর্থ উপার্জন ও বিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন নারী এনে অনৈতিক কার্যকলাপসহ নানা অভিযোগ দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগের ভিক্তিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তদন্তে চারটি অভিযোগের মধ্যে তিনটি প্রমাণিত হলেও অজানা কারণে তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন না করে’ স্বপদে বহাল রাখেছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের এমন কর্মকান্ডে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে ঐ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে।সম্প্রতি গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে এমন একটি খবর আসলে’ অনুসন্ধানে গিয়ে তার প্রমাণও মিলেছে।

সরোজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী কামরুজ্জামান যুবলীগ কর্মী হওয়ায় বিদ্যালয়ে রাতে নারী ও খদ্দের নিয়ে এসে অর্থ উপার্জন, জুয়ার বোর্ডসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকতো সে। আওয়ামী সরকার পতনের পর কিছুদিন বন্ধ রাখলেও পরে আবারও একই কর্মকাণ্ড চালাতে থাকলে এলাকাবাসী তাকে জুয়ার বোড চলাকালীন ধাওয়া দিলে সে পালিয়ে যায়। পরে তার অপসারণ চেয়ে ৪৮ জন অভিভাবক ও সচেতন ব্যক্তি সাক্ষরিত ওই বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক বরাবর অভিযোগ দেয়। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী কামরুজ্জামানের বিষয়ে অবহিত করলে’ তিনি উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেনকে আহ্বায়ক ও রবি শংকর দেওয়ান এবং হারুনুর রশিদকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির কাছে অভিযুক্ত কামরুজ্জামান সমস্ত অপরাধ স্বীকার করলেও এলাকার একটি স্বার্থনেষী মহলের তদবিরে মাত্র ২০ (বিশ) হাজার টাকা জরিমানা মাধ্যমে তাকে স্বপদে চাকরিতে বহাল করা হয়। তবে’ একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে দুইলক্ষ টাকার বিনিময়ে কামরুজ্জামানের সকল অপরাধ ধামাচাপা দিয়েছে একটি মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করেছে ওই দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরী কামরুজ্জামান। তাদের প্ররোচনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা বানু এতসব জঘন্য অপরাধ করার পরেও তাকে বহাল তবিয়তে চাকরির সুযোগ করে দিয়েছেন।

অভিযুক্ত কামরুজ্জামান জানান, তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সত্য। তিনি ওই কাজে জড়িত ছিলেন বলে নিজে স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করলে এলাকাবাসী ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

বাগুড়ী-কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা খাতুন জানান, কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রায় সকল অভিযোগ সত্য প্রমানিত হয় এবং তদন্ত কমিটি কাছে সে নিজে তার অপরাধ স্বীকার করে। পরে এলাকাবাসীর অনুরোধে তাকে এবারের মতো ক্ষমা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা বানু জানান, কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আংশিক প্রমানিত হয়েছে এবং তাকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে বলে’ তদন্ত কিমিটি আমার কাছে রিপোর্ট জমা দেয়। তবে’ তার বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত করে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. কাজী নাজিব হাসান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই, তবে তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি জানবেন। তিনি আরো জানান, যদি ওই দপ্তরি (কাম) নৈশপ্রহরীর বিরদ্ধে এসকল অভিযোগ প্রমানিত হয়’ তাহলে তাকে ক্ষমা করার সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত এবং মামলার সুপারিশ করা হবে বলে তিনি জানান।