০৮:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোরআন অবমাননার চূড়ান্ত পরিণতি মৃত্যুদন্ড

 

✍️মাওলানা শেখ মিলাদ হোসাইন সিদ্দিকী হাফিজাহুল্লাহঃ

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপূর্ব পাল কুরআন অবমাননার মাধ্যমে যে গর্হিত কাজ করেছে তা শুধু নিন্দনীয়ই নয়,একইসাথে শাস্তিযোগ্য। কোনোপ্রকার ব্যাখ্যা দিয়ে এই কাজের জাস্টিফিকেশানের সুযোগ নেই।

মহাগ্রন্থ আল কোরআন পৃথিবীর সবচেয়ে বহুল পঠিত ধর্মগ্রন্থ। পবিত্র এই গ্রন্থের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক জড়িয়ে আছে বিশ্বের প্রায় ২৫০ কোটি মুসলমানের। কেউ যখন কোরআন অবমাননা করে, তখন সে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায়। যা ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর চরম আঘাত।
কোনো সভ্য মানুষ এমন জঘন্য অপকর্ম মেনে নিতে পারে না। তা ছাড়া পৃথিবীর সব ধর্মগ্রন্থই নিজ নিজ অনুসারীদের কাছে অতি মর্যাদা ও সম্মানের বস্তু। তাই ধর্মগ্রন্থ অবমাননা সব ধর্মে নিন্দনীয় কাজ। সুতরাং যারাই কোরআন অবমাননায় অংশ নিয়েছে বা নেবে তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে চরম দুর্ভোগ ও ভয়াবহ শাস্তি।

আল্লাহ তায়ালা বলেন….

إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَنْ يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ مِنْ خِلَافٍ أَوْ يُنْفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الْآَخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ

অনুবাদ:যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে দুশমনিতে লিপ্ত হয় এবং পৃথিবীতে অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টির পাঁয়তারা করে, তাদের শাস্তি কেবল মৃত্যুদন্ড, শূলিবিদ্ধ করে হত্যা কিংবা হাত পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা অথবা নির্বাসিত করা (কারাগারে নিক্ষেপ করা)। এ তো হল তাদের পার্থিব অপমান। আর পরকালেও তাদের জন্য অপেক্ষা করছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (সূরা মায়েদা:৩৩)

সুতরাং যারাই কোরআন অবমাননায় অংশ নিয়েছে বা নেবে তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে চরম দুর্ভোগ ও ভয়াবহ শাস্তি।

আল্লাহ তাআলা বলেন….

وَیۡلٌ لِّكُلِّ اَفَّاكٍ اَثِیۡمٍ
یَّسۡمَعُ اٰیٰتِ اللّٰهِ تُتۡلٰی عَلَیۡهِ ثُمَّ یُصِرُّ مُسۡتَكۡبِرًا كَاَنۡ لَّمۡ یَسۡمَعۡهَا ۚ فَبَشِّرۡهُ بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ

অনুবাদ: ‘দুর্ভোগ প্রত্যেক ঘোর মিথ্যাবাদী মহাপাপীর, যে আল্লাহর আয়াতের আবৃত্তি শোনে অথচ ঔদ্ধত্যের সঙ্গে (নিজ মতবাদে) অটল থাকে। যেন সে তা শোনেইনি। সুতরাং ওকে মর্মন্তুদ শাস্তির সুসংবাদ দাও। (সুরা : জাসিয়া, আয়াত :৭-৮)

📖রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন….,
যারা কোরআনকে অস্বীকার করবে, তারা দুনিয়ায় লাঞ্ছিত এবং পরকালে জাহান্নামে পতিত হবে।
(মুসলিম:১৭৮২)

📖একবার সাহাবি আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) তাঁর ছাত্রদের বলেন, ‘জেনে রাখো, কোরআন (অনুসারীর পক্ষে অবমাননাকারীদের বিপক্ষে) এমন সুপারিশকারী, যার সুপারিশ কবুল করা হবে। অতএব, যে কোরআনের অনুসরণ করবে, সে জান্নাতে যাবে। আর যে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’
(ফাজায়েলে কোরআন, ইবনে কাসির :১৫১)

সুতরাং সুপথপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য মহান আল্লাহর এই কালামকে আঁকড়ে ধরার বিকল্প নেই। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্র কোরআনের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা বলেন….

وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا

অনুবাদ:‘তিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরিক করেন না।’
(সুরা কাহাফ:২৬)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন….

إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ

অনুবাদ:‘হুকুমের মালিক কেবল আল্লাহ’
(সুরা ইউসুফ:৬৭)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে….

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ

অনুবাদ:‘যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।’
(সুরা মায়েদা:৪৪)

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

মধুপুরে শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ও নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

কোরআন অবমাননার চূড়ান্ত পরিণতি মৃত্যুদন্ড

প্রকাশের সময়ঃ ০৮:৫২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

 

✍️মাওলানা শেখ মিলাদ হোসাইন সিদ্দিকী হাফিজাহুল্লাহঃ

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপূর্ব পাল কুরআন অবমাননার মাধ্যমে যে গর্হিত কাজ করেছে তা শুধু নিন্দনীয়ই নয়,একইসাথে শাস্তিযোগ্য। কোনোপ্রকার ব্যাখ্যা দিয়ে এই কাজের জাস্টিফিকেশানের সুযোগ নেই।

মহাগ্রন্থ আল কোরআন পৃথিবীর সবচেয়ে বহুল পঠিত ধর্মগ্রন্থ। পবিত্র এই গ্রন্থের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক জড়িয়ে আছে বিশ্বের প্রায় ২৫০ কোটি মুসলমানের। কেউ যখন কোরআন অবমাননা করে, তখন সে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায়। যা ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর চরম আঘাত।
কোনো সভ্য মানুষ এমন জঘন্য অপকর্ম মেনে নিতে পারে না। তা ছাড়া পৃথিবীর সব ধর্মগ্রন্থই নিজ নিজ অনুসারীদের কাছে অতি মর্যাদা ও সম্মানের বস্তু। তাই ধর্মগ্রন্থ অবমাননা সব ধর্মে নিন্দনীয় কাজ। সুতরাং যারাই কোরআন অবমাননায় অংশ নিয়েছে বা নেবে তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে চরম দুর্ভোগ ও ভয়াবহ শাস্তি।

আল্লাহ তায়ালা বলেন….

إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَنْ يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ مِنْ خِلَافٍ أَوْ يُنْفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الْآَخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ

অনুবাদ:যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে দুশমনিতে লিপ্ত হয় এবং পৃথিবীতে অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টির পাঁয়তারা করে, তাদের শাস্তি কেবল মৃত্যুদন্ড, শূলিবিদ্ধ করে হত্যা কিংবা হাত পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা অথবা নির্বাসিত করা (কারাগারে নিক্ষেপ করা)। এ তো হল তাদের পার্থিব অপমান। আর পরকালেও তাদের জন্য অপেক্ষা করছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (সূরা মায়েদা:৩৩)

সুতরাং যারাই কোরআন অবমাননায় অংশ নিয়েছে বা নেবে তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে চরম দুর্ভোগ ও ভয়াবহ শাস্তি।

আল্লাহ তাআলা বলেন….

وَیۡلٌ لِّكُلِّ اَفَّاكٍ اَثِیۡمٍ
یَّسۡمَعُ اٰیٰتِ اللّٰهِ تُتۡلٰی عَلَیۡهِ ثُمَّ یُصِرُّ مُسۡتَكۡبِرًا كَاَنۡ لَّمۡ یَسۡمَعۡهَا ۚ فَبَشِّرۡهُ بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ

অনুবাদ: ‘দুর্ভোগ প্রত্যেক ঘোর মিথ্যাবাদী মহাপাপীর, যে আল্লাহর আয়াতের আবৃত্তি শোনে অথচ ঔদ্ধত্যের সঙ্গে (নিজ মতবাদে) অটল থাকে। যেন সে তা শোনেইনি। সুতরাং ওকে মর্মন্তুদ শাস্তির সুসংবাদ দাও। (সুরা : জাসিয়া, আয়াত :৭-৮)

📖রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন….,
যারা কোরআনকে অস্বীকার করবে, তারা দুনিয়ায় লাঞ্ছিত এবং পরকালে জাহান্নামে পতিত হবে।
(মুসলিম:১৭৮২)

📖একবার সাহাবি আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) তাঁর ছাত্রদের বলেন, ‘জেনে রাখো, কোরআন (অনুসারীর পক্ষে অবমাননাকারীদের বিপক্ষে) এমন সুপারিশকারী, যার সুপারিশ কবুল করা হবে। অতএব, যে কোরআনের অনুসরণ করবে, সে জান্নাতে যাবে। আর যে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’
(ফাজায়েলে কোরআন, ইবনে কাসির :১৫১)

সুতরাং সুপথপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য মহান আল্লাহর এই কালামকে আঁকড়ে ধরার বিকল্প নেই। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্র কোরআনের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা বলেন….

وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا

অনুবাদ:‘তিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরিক করেন না।’
(সুরা কাহাফ:২৬)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন….

إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ

অনুবাদ:‘হুকুমের মালিক কেবল আল্লাহ’
(সুরা ইউসুফ:৬৭)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে….

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ

অনুবাদ:‘যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।’
(সুরা মায়েদা:৪৪)