০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাবা বক্তব্য দিলেই জেলে আমাকে নির্যাতন করা হতো ; খন্দকার আকতার হামিদ পবন

 

মানিকগঞ্জঃ বিএনপি’র প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কনিষ্ঠ ছেলে খন্দকার আকতার হামিদ পবন বলেছেন, স্বৈরাচারের ১৭ বছরে ২০ বার কারাভোগ করেছি। মিথ্যা গায়েবি মামলায় জেলে গিয়েছি। আমার উপরে শারীরিক নির্যাতন হয়েছে, যা আমি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। ওয়ান-ইলেভেনে যখন আমার বাবাকে নত করতে পারেনি, তখন বারবার আমাকে সেনা ও পুলিশ প্রহার করেছে। জেলখানার ভিতরেও আমাকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি।

আমার বাবা যতবার‌ ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকারের নামে বক্তব্য দিয়েছেন, জনগণের স্বার্থে কথা বলেছেন, বিএনপি’র পক্ষে কথা বলেছেন, ততবারই জেলের ভেতর আমাকে জেল কোড আইন অমান্য করে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত ৩১ দফা প্রচারণা ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি লাভলু মোল্লার সভাপতিত্বে খন্দকার আকতার হামিদ পবন বলেন, পানি খেতে চাইলে পানি দিত না- বলত, কেন তোর বাবা খালেদা জিয়ার পক্ষে কথা বলে, বিএনপি’র পক্ষে কথা বলে? আমাকে মেরে রক্তাক্ত করা হতো। আমি অনেক নির্মম অত্যাচারের শিকার। তাই আমি মনে করি, আল্লাহ দিন ফিরিয়ে দিয়েছেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের হাত থেকে এদেশের মানুষকে মুক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, খন্দকার পরিবারের প্রতিটি সদস্য দীর্ঘ ১৭ বছর অন্যায়-অত্যাচার আর জুলুমের শিকার হয়েছে। আমরা জিয়া পরিবার এবং বিএনপিকে ছেড়ে যাইনি। আমি বিশ্বাস করি- দলের হাই কমান্ড থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমরা কষ্ট করেছি, জেল খেটেছি, রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। দলের মানুষ আমাকে ভালোবাসে, তারেক রহমান, বেগম খালেদা জিয়া আমাকে ভালো বাসেন। অতএব, আমি বিশ্বাস করি আল্লাহর দয়া থাকলে মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়) আসনে আমাকেই বিএনপি’র মনোনয়ন দেওয়া হবে।

মুক্তিযুদ্ধ এবং জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যখন সেনাবাহিনীতে থাকা অবস্থায় দেশে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন তিনি নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে তিনি মাঠের মধ্যে থেকে যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। ৭১ সালে গেরিলা যোদ্ধারা যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাদের তিনি মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তাদের ছড়িয়ে দেন চারিদিকে। ছড়িয়ে দেওয়ার পর তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের সাধারণ মানুষকে নিয়ে যুদ্ধ করেন। লাখো মানুষ মারা গেছেন, শহীদ হয়েছেন, মা-বোনেরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তবুও এদেশের প্রতিবাদী মানুষ পাক হানাদার বাহিনীর কাছে মাথা নত করেনি- তারা বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশ এমন এক উঁচু জাতি, যারা কখনো মাথা নত করে না।

খন্দকার পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং বড় ভাই আব্দুল হামিদ খান ডাবলুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমার বড় ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল ঘিওর, দৌলতপুর এবং শিবালয়ের মানুষের জন্য তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা। তিনি তা করতে পারেননি, আল্লাহ তাকে নিয়ে গেছেন। আমার বাবার সংসদীয় আসন এবং ভাইয়ের স্থানে আমি এসে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষের হয়ে সেবা করতে চাই।
এসময় প্রয়াত খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুর স্ত্রী নাসিমা হামিদ শিমু, ছেলে অরভিল খন্দকারসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

যশোর খুলনা ও কপিলমুনিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এডুকেশন এক্সপো- ২৫

বাবা বক্তব্য দিলেই জেলে আমাকে নির্যাতন করা হতো ; খন্দকার আকতার হামিদ পবন

প্রকাশের সময়ঃ ১২:৩০:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

 

মানিকগঞ্জঃ বিএনপি’র প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কনিষ্ঠ ছেলে খন্দকার আকতার হামিদ পবন বলেছেন, স্বৈরাচারের ১৭ বছরে ২০ বার কারাভোগ করেছি। মিথ্যা গায়েবি মামলায় জেলে গিয়েছি। আমার উপরে শারীরিক নির্যাতন হয়েছে, যা আমি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। ওয়ান-ইলেভেনে যখন আমার বাবাকে নত করতে পারেনি, তখন বারবার আমাকে সেনা ও পুলিশ প্রহার করেছে। জেলখানার ভিতরেও আমাকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি।

আমার বাবা যতবার‌ ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকারের নামে বক্তব্য দিয়েছেন, জনগণের স্বার্থে কথা বলেছেন, বিএনপি’র পক্ষে কথা বলেছেন, ততবারই জেলের ভেতর আমাকে জেল কোড আইন অমান্য করে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত ৩১ দফা প্রচারণা ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি লাভলু মোল্লার সভাপতিত্বে খন্দকার আকতার হামিদ পবন বলেন, পানি খেতে চাইলে পানি দিত না- বলত, কেন তোর বাবা খালেদা জিয়ার পক্ষে কথা বলে, বিএনপি’র পক্ষে কথা বলে? আমাকে মেরে রক্তাক্ত করা হতো। আমি অনেক নির্মম অত্যাচারের শিকার। তাই আমি মনে করি, আল্লাহ দিন ফিরিয়ে দিয়েছেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের হাত থেকে এদেশের মানুষকে মুক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, খন্দকার পরিবারের প্রতিটি সদস্য দীর্ঘ ১৭ বছর অন্যায়-অত্যাচার আর জুলুমের শিকার হয়েছে। আমরা জিয়া পরিবার এবং বিএনপিকে ছেড়ে যাইনি। আমি বিশ্বাস করি- দলের হাই কমান্ড থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমরা কষ্ট করেছি, জেল খেটেছি, রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। দলের মানুষ আমাকে ভালোবাসে, তারেক রহমান, বেগম খালেদা জিয়া আমাকে ভালো বাসেন। অতএব, আমি বিশ্বাস করি আল্লাহর দয়া থাকলে মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়) আসনে আমাকেই বিএনপি’র মনোনয়ন দেওয়া হবে।

মুক্তিযুদ্ধ এবং জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যখন সেনাবাহিনীতে থাকা অবস্থায় দেশে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন তিনি নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে তিনি মাঠের মধ্যে থেকে যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। ৭১ সালে গেরিলা যোদ্ধারা যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাদের তিনি মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তাদের ছড়িয়ে দেন চারিদিকে। ছড়িয়ে দেওয়ার পর তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের সাধারণ মানুষকে নিয়ে যুদ্ধ করেন। লাখো মানুষ মারা গেছেন, শহীদ হয়েছেন, মা-বোনেরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তবুও এদেশের প্রতিবাদী মানুষ পাক হানাদার বাহিনীর কাছে মাথা নত করেনি- তারা বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশ এমন এক উঁচু জাতি, যারা কখনো মাথা নত করে না।

খন্দকার পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং বড় ভাই আব্দুল হামিদ খান ডাবলুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমার বড় ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল ঘিওর, দৌলতপুর এবং শিবালয়ের মানুষের জন্য তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা। তিনি তা করতে পারেননি, আল্লাহ তাকে নিয়ে গেছেন। আমার বাবার সংসদীয় আসন এবং ভাইয়ের স্থানে আমি এসে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষের হয়ে সেবা করতে চাই।
এসময় প্রয়াত খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুর স্ত্রী নাসিমা হামিদ শিমু, ছেলে অরভিল খন্দকারসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।