
নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন এক রোহিঙ্গা যুবক।
সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক শামীম আহমেদ। এর আগে দুপুরে ফতুল্লার ভুইগড় আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে তাকে আটক করা হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্রে গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের নাম মো. আরিয়ান। তিনি কক্সবাজারের উখিয়া থানার ২৬ নম্বর লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
আটক যুবকের ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলিয়ে রোহিঙ্গা ডাটাবেজ অনুযায়ী তার নাম মো. আনোস। পিতার নাম নুর হোসেন। জন্মতারিখ ০৭/০১/২০০১। বয়স ১৬ বছর। রেফারেন্স নম্বর 16020171016080808। বাংলাদেশে প্রবেশের তারিখ: ১৫/০৯/২০১৭।
পুলিশ জানায়, দালাল চক্রের সহায়তায় ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে তিনি বাংলাদেশি পরিচয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন। সেই এনআইডি দিয়েই তিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় বিষয়টি ধরা পড়ে। এ সময় তার কাছে পাসপোর্ট আবেদনপত্র, বিভিন্ন নথি এবং নারায়ণগঞ্জের একটি বিদ্যুৎ বিলের কপি পাওয়া যায় ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দালালের মাধ্যমে ওই রোহিঙ্গা যুবক বাংলাদেশি সেজে পাসপোর্ট তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। কারা এ নথি জোগাড় করেছে এবং এর পেছনে কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ— রোহিঙ্গারা কীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছে? নির্বাচন অফিসের তদারকিতেই বা এত বড় ফাঁকফোকর কেন? তাদের মতে, অসাধু কর্মকর্তা ও দালালদের শনাক্ত না করলে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়বে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, আটককৃত যুবকের পেছনে থাকা দালাল চক্র ও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, আমাদের অফিসে যে কোনো আবেদনকারীর নথি সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করা হয়। সোমবার ওই যুবকের কাগজপত্রে অসংগতি পাওয়ায় আমরা বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করি। পরে নিশ্চিত হই, তিনি রোহিঙ্গা। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। দালাল চক্র বা কোনো অসাধু ব্যক্তি যাতে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে পাসপোর্ট না করতে পারে, সে জন্য কর্মকর্তারা সতর্ক আছেন। তবে এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। তদন্তে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।