০২:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল কোরআন ও তাফসিরের আলোকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী

 

মাওলানা শেখ মিলাদ হোসাইন সিদ্দিকী হাফিজাহুল্লাহঃ ভূমিকা:মূলত ঈদ অর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ প্রকাশ করা |

আর “মীলাদ ও” নবী” দুইটি শব্দ একত্রে মিলিয়ে হয় মীলাদুন্নবী | ” মীলাদের” তিনটি শব্দ রয়েছে – ميلاد মীলাদ, مولد মাওলিদ, مولود মাওলূদ | মীলাদ শব্দের অর্থ হচ্ছে, জন্মবৃত্তান্ত (মানে হল বিস্তৃতভাবে বংশবৃত্তান্ত, স্থান-কালসহ আলোচনা করা)

অর্থাৎ, আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থে ميلاد النبي বা ” মীলাদুন্নবী” বলতে হুজুর পাক (ﷺ) উনার বিলাদত শরীফকেই বুঝায়।

আর পারিভাষিক বা ব্যাবহারিক অর্থে,মীলাদুন্নবী বলতে হুজুর পাক (ﷺ) উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে উনার শান-মান আলোচনা করা, উনার প্রতি সালাত সালাম পাঠ করা, এবং উনার পবিত্রতম জীবনী মুবারকের সামগ্রিক বিষয়ের আলোচনা বুঝানো হয়।

★দলিল নং (১)
👉আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সূরা মায়িদার ১১৪ নং আয়াতে ইরশাদ করেন…
قَالَ عِیۡسَی ابۡنُ مَرۡیَمَ اللّٰہُمَّ رَبَّنَاۤ اَنۡزِلۡ عَلَیۡنَا مَآئِدَۃً مِّنَ السَّمَآءِ تَکُوۡنُ لَنَا عِیۡدًا لِّاَوَّلِنَا وَاٰخِرِنَا وَاٰیَۃً مِّنۡکَ ۚ وَارۡزُقۡنَا وَاَنۡتَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ

অনুবাদ: সুতরাং ঈসা ইবনে মারয়াম বললেন, হে আল্লাহ, আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য আসমান থেকে একটি খাঞ্চা অবতীর্ণ করুন, যা হবে আমাদের এবং আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য আনন্দ (ঈদ) উদযাপনের
কারণ এবং আপনার পক্ষ হতে একটি নিদর্শন। আমাদেরকে (এ নি‘আমত) অবশ্যই প্রদান করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা।

ব্যাখ্যা:
হযরত ঈসা (عليه السلام) এর উম্মতের জন্য আসমান থেকে খাদ্য নাযিল হওয়ার দিনটি যদি ঈদের দিন হয়, তাহলে যার উসীলায় জগৎ সৃষ্টি, যিনি সমগ্র জগৎ এর নিয়মাত, সকল নিয়মতের মূল, যিনি আন নি’মাতুল কুবরা সেই রাসূল (ﷺ) এর আগমন কি ঈদের (আনন্দের) দিন নয়?

কারণ হুজুর পাক (ﷺ) এর আগমনের দিন হল শয়তানের কান্নার দিন আর ইমানদারদের জন্য খুশির দিন।

📖 ইমাম ইবনে কাসীর (رحمة الله) লিখেন…

حكى السهيلي عن تفسير بقي بن مخلد الحافظ : أن إبليس رن أربع رنات; حين لعن ، وحين أهبط ، وحين ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم ، وحين أنزلت الفاتحة

“শয়তান চার বার উচ্চস্বরে কেঁদেছিল,
(১) যখন আল্লাহ তায়ালা তাকে অভিশপ্ত আখ্যা দেন;
(২) যখন তাকে বেহেস্ত থেকে বের করে দেয়া হয়।
(৩) যখন হুজুর (ﷺ) এর বিলাদত/মিলাদ হয়।
(৪) যখন সূরা ফাতেহা নাযেল হয়।”
(ইমাম ইবনে কাসীর: আল-বেদায়া ওয়ান নেহায়া-২য় খণ্ড ২৬৬, ২৬৭,পৃষ্ঠা, প্রকাশনা: মাকতাবাতুল মা’রেফা, বয়রুত লেবানন।)

★দলিল নং (২)
👉আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনের সূরা ইউনূস এর ৫৮ নং আয়াতে ইরশাদ করেন….

قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
{يونس-٥٨}…

অনুবাদ: হে হাবিব (ﷺ) আপনি বলে দিন, মহান আল্লাহর “ফযল” ও “রহমত” প্রাপ্তির কারণে তাদের উচিত খুশি প্রকাশ করা। এটি তাদের (সমুদয়) সঞ্চয় অপেক্ষা সর্বাপেক্ষা উত্তম।

📖তাফসীর…

👉বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত কাতাদা (رضي الله عنه) ও তাবেয়ী ইমাম মুজাহিদ (رحمة الله) সহ আর ও অনেকে বর্ণনা করেন যে, আহলে বায়াতের অন্যতম সদস্য হযরত ইমাম আবু জাফর বাকের (رضي الله عنه) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন-

عن قتادة رضى الله تعالى عنه ومجاهد وغيرهما قال ابو جعفر الباقر عليه السلام فضل الله رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم .
-“আল্লাহর (ফদ্বল) বা অনুগ্রহ দ্বারা রাসূল (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।”
[ইমাম তিবরিসী, মাজমাউল বায়ান ৪/১৭৭-১৭৮ পৃ.।]

👉বিশ্ব-বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও তাফসিরকারক ইমাম যওজী (رحمة الله) [ওফাত.৫৯৭হি.) উক্ত আয়াতে সম্পর্কে লিখেন,

ফাদ্বল দ্বারা ইলম বা জ্ঞানকে এবং রহমত দ্বারা মুহাম্মদ (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে যেমনটি তাবেয়ী ইমাম দাহ্হাক (رحمة الله) তাঁর শায়খ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন।”
[ইমাম যওজী, যা’দুল মাসীর ফি উলূমূত তাফাসীর, ৪/৪০ পৃ.]

👉ইমাম হাইয়্যান আন্দুলুসী (رحمة الله) [ওফাত. ৭৪৫হি.] বর্ণনা করেন-
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فِيمَا رَوَى الضَّحَّاكُ عَنْهُ: الْفَضْلُ الْعِلْمُ وَالرَّحْمَةُ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

“তাবেয়ী ইমাম দাহ্হাক (رحمة الله) সাহাবী হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন- উক্ত আয়াতে (ফদ্বল) দ্বারা ইলমকে এবং (রহমত) দ্বারা মুহাম্মদ (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।”
[ইমাম হাইয়্যান, তাফসীরে বাহারুল মুহিত, ৫/১৭১ পৃ.]

👉হাফিজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) [ওফাত. ৯১১হি.) লিখেন-

وَأخرج أَبُو الشَّيْخ عَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا فِي الْآيَة قَالَ: فضل الله الْعلم وَرَحمته مُحَمَّد صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ الله تَعَالَى وَمَا أَرْسَلْنَاك إِلَّا رَحْمَة للْعَالمين.
(১০৭ الْأَنْبِيَاء الْآيَة )

-‘‘ইমাম আবু শায়খ ইস্পাহানী (رحمة الله) তার তাফসীরে উল্লেখ করেন, সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে আল্লাহর (ফাদ্বল) বা অনুগ্রহ দ্বারা ইলম বা জ্ঞানকে এবং (রহমত) দ্বারা নবীজী (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন- হে হাবিব আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্ব-জগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্ররেণ করেছি।(সুরা আম্বিয়া, আয়াত নং-১০৭)।’’
[ইমাম তিরমিযী-মাজমাউল বায়ান,৫/১৭৭-১৭৮পৃ, তাফসীরে দূররুল মানছুর – ১০ নং সূরা – ১১ পারা- সূরা ইউনূছ ৫৮]

👉বিখ্যাত মুফাস্সির ইমাম সৈয়দ শিহাবুদ্দীন মাহমুদ আলূসী বাগদাদী (রহ.) [ওফাত. ১২৭০হি.] স্বীয় তাফসীরে উল্লেখ করেন-

وأخرج أبو الشيخ عن ابن عباس رضي الله تعالى عنهما أن الفضل العلم والرحمة محمد صلّى الله عليه وسلم.

“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন নিশ্চয়ই (ফাদ্বলুল্লাহ্) বা অনুগ্রহ হল ইলমে দ্বীন এবং রহমত হলো নবী করিম (ﷺ)।’’[আল্লাম শিহাব উদ্দিন সৈয়দ মাহমুদ আলুসী-রুহুল মা’আনী,৬/১৩৩]

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

শ্রীবরদীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগ জব্দ ও জরিমানা আদায়

আল কোরআন ও তাফসিরের আলোকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী

প্রকাশের সময়ঃ ১২:৪৩:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

মাওলানা শেখ মিলাদ হোসাইন সিদ্দিকী হাফিজাহুল্লাহঃ ভূমিকা:মূলত ঈদ অর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ প্রকাশ করা |

আর “মীলাদ ও” নবী” দুইটি শব্দ একত্রে মিলিয়ে হয় মীলাদুন্নবী | ” মীলাদের” তিনটি শব্দ রয়েছে – ميلاد মীলাদ, مولد মাওলিদ, مولود মাওলূদ | মীলাদ শব্দের অর্থ হচ্ছে, জন্মবৃত্তান্ত (মানে হল বিস্তৃতভাবে বংশবৃত্তান্ত, স্থান-কালসহ আলোচনা করা)

অর্থাৎ, আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থে ميلاد النبي বা ” মীলাদুন্নবী” বলতে হুজুর পাক (ﷺ) উনার বিলাদত শরীফকেই বুঝায়।

আর পারিভাষিক বা ব্যাবহারিক অর্থে,মীলাদুন্নবী বলতে হুজুর পাক (ﷺ) উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে উনার শান-মান আলোচনা করা, উনার প্রতি সালাত সালাম পাঠ করা, এবং উনার পবিত্রতম জীবনী মুবারকের সামগ্রিক বিষয়ের আলোচনা বুঝানো হয়।

★দলিল নং (১)
👉আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সূরা মায়িদার ১১৪ নং আয়াতে ইরশাদ করেন…
قَالَ عِیۡسَی ابۡنُ مَرۡیَمَ اللّٰہُمَّ رَبَّنَاۤ اَنۡزِلۡ عَلَیۡنَا مَآئِدَۃً مِّنَ السَّمَآءِ تَکُوۡنُ لَنَا عِیۡدًا لِّاَوَّلِنَا وَاٰخِرِنَا وَاٰیَۃً مِّنۡکَ ۚ وَارۡزُقۡنَا وَاَنۡتَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ

অনুবাদ: সুতরাং ঈসা ইবনে মারয়াম বললেন, হে আল্লাহ, আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য আসমান থেকে একটি খাঞ্চা অবতীর্ণ করুন, যা হবে আমাদের এবং আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য আনন্দ (ঈদ) উদযাপনের
কারণ এবং আপনার পক্ষ হতে একটি নিদর্শন। আমাদেরকে (এ নি‘আমত) অবশ্যই প্রদান করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা।

ব্যাখ্যা:
হযরত ঈসা (عليه السلام) এর উম্মতের জন্য আসমান থেকে খাদ্য নাযিল হওয়ার দিনটি যদি ঈদের দিন হয়, তাহলে যার উসীলায় জগৎ সৃষ্টি, যিনি সমগ্র জগৎ এর নিয়মাত, সকল নিয়মতের মূল, যিনি আন নি’মাতুল কুবরা সেই রাসূল (ﷺ) এর আগমন কি ঈদের (আনন্দের) দিন নয়?

কারণ হুজুর পাক (ﷺ) এর আগমনের দিন হল শয়তানের কান্নার দিন আর ইমানদারদের জন্য খুশির দিন।

📖 ইমাম ইবনে কাসীর (رحمة الله) লিখেন…

حكى السهيلي عن تفسير بقي بن مخلد الحافظ : أن إبليس رن أربع رنات; حين لعن ، وحين أهبط ، وحين ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم ، وحين أنزلت الفاتحة

“শয়তান চার বার উচ্চস্বরে কেঁদেছিল,
(১) যখন আল্লাহ তায়ালা তাকে অভিশপ্ত আখ্যা দেন;
(২) যখন তাকে বেহেস্ত থেকে বের করে দেয়া হয়।
(৩) যখন হুজুর (ﷺ) এর বিলাদত/মিলাদ হয়।
(৪) যখন সূরা ফাতেহা নাযেল হয়।”
(ইমাম ইবনে কাসীর: আল-বেদায়া ওয়ান নেহায়া-২য় খণ্ড ২৬৬, ২৬৭,পৃষ্ঠা, প্রকাশনা: মাকতাবাতুল মা’রেফা, বয়রুত লেবানন।)

★দলিল নং (২)
👉আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনের সূরা ইউনূস এর ৫৮ নং আয়াতে ইরশাদ করেন….

قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
{يونس-٥٨}…

অনুবাদ: হে হাবিব (ﷺ) আপনি বলে দিন, মহান আল্লাহর “ফযল” ও “রহমত” প্রাপ্তির কারণে তাদের উচিত খুশি প্রকাশ করা। এটি তাদের (সমুদয়) সঞ্চয় অপেক্ষা সর্বাপেক্ষা উত্তম।

📖তাফসীর…

👉বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত কাতাদা (رضي الله عنه) ও তাবেয়ী ইমাম মুজাহিদ (رحمة الله) সহ আর ও অনেকে বর্ণনা করেন যে, আহলে বায়াতের অন্যতম সদস্য হযরত ইমাম আবু জাফর বাকের (رضي الله عنه) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন-

عن قتادة رضى الله تعالى عنه ومجاهد وغيرهما قال ابو جعفر الباقر عليه السلام فضل الله رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم .
-“আল্লাহর (ফদ্বল) বা অনুগ্রহ দ্বারা রাসূল (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।”
[ইমাম তিবরিসী, মাজমাউল বায়ান ৪/১৭৭-১৭৮ পৃ.।]

👉বিশ্ব-বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও তাফসিরকারক ইমাম যওজী (رحمة الله) [ওফাত.৫৯৭হি.) উক্ত আয়াতে সম্পর্কে লিখেন,

ফাদ্বল দ্বারা ইলম বা জ্ঞানকে এবং রহমত দ্বারা মুহাম্মদ (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে যেমনটি তাবেয়ী ইমাম দাহ্হাক (رحمة الله) তাঁর শায়খ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন।”
[ইমাম যওজী, যা’দুল মাসীর ফি উলূমূত তাফাসীর, ৪/৪০ পৃ.]

👉ইমাম হাইয়্যান আন্দুলুসী (رحمة الله) [ওফাত. ৭৪৫হি.] বর্ণনা করেন-
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فِيمَا رَوَى الضَّحَّاكُ عَنْهُ: الْفَضْلُ الْعِلْمُ وَالرَّحْمَةُ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

“তাবেয়ী ইমাম দাহ্হাক (رحمة الله) সাহাবী হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন- উক্ত আয়াতে (ফদ্বল) দ্বারা ইলমকে এবং (রহমত) দ্বারা মুহাম্মদ (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।”
[ইমাম হাইয়্যান, তাফসীরে বাহারুল মুহিত, ৫/১৭১ পৃ.]

👉হাফিজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) [ওফাত. ৯১১হি.) লিখেন-

وَأخرج أَبُو الشَّيْخ عَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا فِي الْآيَة قَالَ: فضل الله الْعلم وَرَحمته مُحَمَّد صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ الله تَعَالَى وَمَا أَرْسَلْنَاك إِلَّا رَحْمَة للْعَالمين.
(১০৭ الْأَنْبِيَاء الْآيَة )

-‘‘ইমাম আবু শায়খ ইস্পাহানী (رحمة الله) তার তাফসীরে উল্লেখ করেন, সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে আল্লাহর (ফাদ্বল) বা অনুগ্রহ দ্বারা ইলম বা জ্ঞানকে এবং (রহমত) দ্বারা নবীজী (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন- হে হাবিব আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্ব-জগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্ররেণ করেছি।(সুরা আম্বিয়া, আয়াত নং-১০৭)।’’
[ইমাম তিরমিযী-মাজমাউল বায়ান,৫/১৭৭-১৭৮পৃ, তাফসীরে দূররুল মানছুর – ১০ নং সূরা – ১১ পারা- সূরা ইউনূছ ৫৮]

👉বিখ্যাত মুফাস্সির ইমাম সৈয়দ শিহাবুদ্দীন মাহমুদ আলূসী বাগদাদী (রহ.) [ওফাত. ১২৭০হি.] স্বীয় তাফসীরে উল্লেখ করেন-

وأخرج أبو الشيخ عن ابن عباس رضي الله تعالى عنهما أن الفضل العلم والرحمة محمد صلّى الله عليه وسلم.

“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন নিশ্চয়ই (ফাদ্বলুল্লাহ্) বা অনুগ্রহ হল ইলমে দ্বীন এবং রহমত হলো নবী করিম (ﷺ)।’’[আল্লাম শিহাব উদ্দিন সৈয়দ মাহমুদ আলুসী-রুহুল মা’আনী,৬/১৩৩]