০৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশুলিয়ায় মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাবার বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকাঃ আশুলিয়ায় ১৭ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তার বাবার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী আশুলিয়ার একটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় স্ত্রী, অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ও মেয়ের স্বামীকে মারধর করা হয়।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজগর হোসেন মানবজমিনকে জানান, প্রাথমিক তদন্তের পর অভিযুক্ত বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে, ঘটনার পর পলাতক থাকায় এখনো তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

সোমবার (১৫ই সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের ইসলাম নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মেয়ের মা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অভিযুক্তকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মেয়ের সঙ্গে বাবার এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এরআগেও বড় মেয়ের সঙ্গে এমন ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সে সময় আপস-মীমাংসায় পার পেয়ে গেলেও এবার তার কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্বজনরা।

অভিযুক্ত রহিম (৪৫) আশুলিয়া থানার পাথালিয়া ইউনিয়নের ইসলাম নগর গ্রামের মৃত আব্দুল সোবাহানের ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রহিম আগে প্রবাসে ছিল। তার সংসারে দুই মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ২০১৩ সালে স্ত্রীকে প্রবাসে নিয়ে যান তিনি। সেখানে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে কুয়েত পুলিশের হাতে এক নারীর সঙ্গে ধরা পড়েন। ২০১৮ সালে সেখানকার পুলিশ তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিলে স্ত্রী প্রবাসে থাকার সুযোগে আরেকটি বিয়ে করে ১১ ও ১৪ বছর বয়সী দুই মেয়েকে নিয়ে আশুলিয়ার ইসলাম নগরে বসবাস শুরু করেন তিনি। দুই মেয়েকে তখন থেকেই বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং বড় মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সে সময় এসব ঘটনায় মামলা হলে আপস-মীমাংসায় রক্ষা পায় রহিম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেয়ের মা কেনাকাটা করতে দোকানে গেলে গত ১৫ই সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৪৫মিনিটে মেয়ের রুমে প্রবেশ করে রহিম। এ সময় রুমের দরজা বন্ধ করে তার ছোট মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। সে জোরপূর্বক মেয়েকে খাটের উপর ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়। মেয়ের মুখে ঘটনা শুনে পরদিন বড় মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে ডেকে এনে অভিযুক্তের স্ত্রী ঘটনার প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত রহিম তাদের সবাইকে মারধর করে এবং ঘটনা কাউকে জানালে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজগর হোসেন বলেন, অভিযুক্ত রহিমের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। ভুক্তভোগীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

নলতায় গভীর রাতে অজ্ঞান করে দুর্ধর্ষ চুরি ব্যর্থ, গুরুতর অসুস্থ-৪

আশুলিয়ায় মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাবার বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশের সময়ঃ ০৫:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকাঃ আশুলিয়ায় ১৭ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তার বাবার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী আশুলিয়ার একটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় স্ত্রী, অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ও মেয়ের স্বামীকে মারধর করা হয়।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজগর হোসেন মানবজমিনকে জানান, প্রাথমিক তদন্তের পর অভিযুক্ত বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে, ঘটনার পর পলাতক থাকায় এখনো তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

সোমবার (১৫ই সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের ইসলাম নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মেয়ের মা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অভিযুক্তকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মেয়ের সঙ্গে বাবার এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এরআগেও বড় মেয়ের সঙ্গে এমন ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সে সময় আপস-মীমাংসায় পার পেয়ে গেলেও এবার তার কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্বজনরা।

অভিযুক্ত রহিম (৪৫) আশুলিয়া থানার পাথালিয়া ইউনিয়নের ইসলাম নগর গ্রামের মৃত আব্দুল সোবাহানের ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রহিম আগে প্রবাসে ছিল। তার সংসারে দুই মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ২০১৩ সালে স্ত্রীকে প্রবাসে নিয়ে যান তিনি। সেখানে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে কুয়েত পুলিশের হাতে এক নারীর সঙ্গে ধরা পড়েন। ২০১৮ সালে সেখানকার পুলিশ তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিলে স্ত্রী প্রবাসে থাকার সুযোগে আরেকটি বিয়ে করে ১১ ও ১৪ বছর বয়সী দুই মেয়েকে নিয়ে আশুলিয়ার ইসলাম নগরে বসবাস শুরু করেন তিনি। দুই মেয়েকে তখন থেকেই বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং বড় মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সে সময় এসব ঘটনায় মামলা হলে আপস-মীমাংসায় রক্ষা পায় রহিম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেয়ের মা কেনাকাটা করতে দোকানে গেলে গত ১৫ই সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৪৫মিনিটে মেয়ের রুমে প্রবেশ করে রহিম। এ সময় রুমের দরজা বন্ধ করে তার ছোট মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। সে জোরপূর্বক মেয়েকে খাটের উপর ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়। মেয়ের মুখে ঘটনা শুনে পরদিন বড় মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে ডেকে এনে অভিযুক্তের স্ত্রী ঘটনার প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত রহিম তাদের সবাইকে মারধর করে এবং ঘটনা কাউকে জানালে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজগর হোসেন বলেন, অভিযুক্ত রহিমের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। ভুক্তভোগীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।