০৫:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

 

জাবিঃ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উপর সাম্প্রতিক হামলার প্রতিবাদে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন ও সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করে শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায় ও সহিংসতা দমনকে অন্যতম দাবি হিসেবে তুলে ধরে।

সমাবেশটি উদ্বোধনী বক্তব্যে শুরুর দিকে একজন শিক্ষার্থী-নেতা বলেন, “আমরা আমাদের শিক্ষকদের ওপর করা এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।শিক্ষক-শিক্ষিকা হলেন এই সমাজের মানসিক গড়নের মূলস্তম্ভ, তাদের সম্মান রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।”

সমাবেশে রসায়ন ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, বাংলাদেশে এমন এক নোংরা কালচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেকোনো ন্যায্য দাবি আদায় করার জন্য আন্দোলন করতে হয়। লং মার্চ টু যমুনা দিতে হয়, লং মার্চ টু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দিতে হয়। এসব নোংরা কালচার থেকে বেরিয়ে আমরা বাংলাদেশে একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে চাচ্ছি।আপনারা জানেন প্রত্যেকটা সরকারি শিক্ষককে ঈদ উপলক্ষে পূর্ণাঙ্গ ভাতা দেয়া হয়। কিন্তু যারা এমপিওভুক্ত শিক্ষক তাদের ২০ শতাংশ ভাতা দেয়া হয়। আমার মনে হয় না একজন শিক্ষক সর্বসাকুল্যে ২০-২৫ হাজার টাকা ইনকাম করে তার সংসার চালাতে পারে। যেখানে আমরা একজন স্টুডেন্ট হয়ে মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়।

আমাদের আরো একটা লজ্জার বিষয় হচ্ছে, আমাদের ছাত্র প্রতিনিধি থেকে উপদেষ্টা আছে এসব উপদেষ্টারা কিন্তু কিছুদিন আগেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক,বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়েই ওখানে গিয়েছে। তারা দেখতেছে তাদের সেই শিক্ষকরাই এখন রাস্তায় লাঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু তারা কোনো টু শব্দ করতেছে না। এসব অন্ধ উপদেষ্টারা ক্ষমতায় বসে তারা মনে করছে তারা কি যেন কি পেয়ে গেছে। তাদেরকে আরা হুশিয়ার করে দিতে চাই যেভাবে আমরা হাসিনাকে তার আসন থেকে লেজটান দিয়ে ফেলে দিয়েছি এসব উপদেষ্টাদেরও আমরা যেকোনো সময় পদচ্যুত করে দেব।

ইংরেজি ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি বলেন, শিক্ষকদের সকল যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন করে তাঁদের মাথা উঁচু করে বাঁচার সুযোগ দিতে হবে। অন্যথায় শিক্ষিত জনগণ শিক্ষকতার মতো এই মূল্যবান পেশা গ্রহণে অনিচ্ছুক হয়ে পড়বে।

পাশাপাশি, নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দেওয়া সেই পুলিশ সদস্যদের, যারা শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলেছে, তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শিক্ষা উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট যারা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার আদেশ দিয়েছেন, তাঁদের অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।

আর যারা ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে আছেন, তাঁদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আপনারাও কিছুদিন আগে শিক্ষকদের হাত ধরেই এখানে উঠে এসেছেন। আজ সেই শিক্ষকদের ওপর নির্যাতন হলেও আপনারা নিশ্চুপ এটা তীব্র লজ্জার বিষয়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার প্রতীক হিসেবেই আপনাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। অথচ আপনাদের উপস্থিতিতেই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে, আর আপনারা নীরব থাকেন এটা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য গভীর হতাশার। তাই সারা বাংলা উত্তাল হওয়ার আগেই শিক্ষকদের সকল যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হোক।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

মধুপুরে শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ও নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

প্রকাশের সময়ঃ ০২:৩১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

 

জাবিঃ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উপর সাম্প্রতিক হামলার প্রতিবাদে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন ও সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করে শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায় ও সহিংসতা দমনকে অন্যতম দাবি হিসেবে তুলে ধরে।

সমাবেশটি উদ্বোধনী বক্তব্যে শুরুর দিকে একজন শিক্ষার্থী-নেতা বলেন, “আমরা আমাদের শিক্ষকদের ওপর করা এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।শিক্ষক-শিক্ষিকা হলেন এই সমাজের মানসিক গড়নের মূলস্তম্ভ, তাদের সম্মান রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।”

সমাবেশে রসায়ন ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, বাংলাদেশে এমন এক নোংরা কালচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেকোনো ন্যায্য দাবি আদায় করার জন্য আন্দোলন করতে হয়। লং মার্চ টু যমুনা দিতে হয়, লং মার্চ টু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দিতে হয়। এসব নোংরা কালচার থেকে বেরিয়ে আমরা বাংলাদেশে একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে চাচ্ছি।আপনারা জানেন প্রত্যেকটা সরকারি শিক্ষককে ঈদ উপলক্ষে পূর্ণাঙ্গ ভাতা দেয়া হয়। কিন্তু যারা এমপিওভুক্ত শিক্ষক তাদের ২০ শতাংশ ভাতা দেয়া হয়। আমার মনে হয় না একজন শিক্ষক সর্বসাকুল্যে ২০-২৫ হাজার টাকা ইনকাম করে তার সংসার চালাতে পারে। যেখানে আমরা একজন স্টুডেন্ট হয়ে মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়।

আমাদের আরো একটা লজ্জার বিষয় হচ্ছে, আমাদের ছাত্র প্রতিনিধি থেকে উপদেষ্টা আছে এসব উপদেষ্টারা কিন্তু কিছুদিন আগেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক,বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়েই ওখানে গিয়েছে। তারা দেখতেছে তাদের সেই শিক্ষকরাই এখন রাস্তায় লাঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু তারা কোনো টু শব্দ করতেছে না। এসব অন্ধ উপদেষ্টারা ক্ষমতায় বসে তারা মনে করছে তারা কি যেন কি পেয়ে গেছে। তাদেরকে আরা হুশিয়ার করে দিতে চাই যেভাবে আমরা হাসিনাকে তার আসন থেকে লেজটান দিয়ে ফেলে দিয়েছি এসব উপদেষ্টাদেরও আমরা যেকোনো সময় পদচ্যুত করে দেব।

ইংরেজি ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি বলেন, শিক্ষকদের সকল যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন করে তাঁদের মাথা উঁচু করে বাঁচার সুযোগ দিতে হবে। অন্যথায় শিক্ষিত জনগণ শিক্ষকতার মতো এই মূল্যবান পেশা গ্রহণে অনিচ্ছুক হয়ে পড়বে।

পাশাপাশি, নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দেওয়া সেই পুলিশ সদস্যদের, যারা শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলেছে, তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শিক্ষা উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট যারা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার আদেশ দিয়েছেন, তাঁদের অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।

আর যারা ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে আছেন, তাঁদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আপনারাও কিছুদিন আগে শিক্ষকদের হাত ধরেই এখানে উঠে এসেছেন। আজ সেই শিক্ষকদের ওপর নির্যাতন হলেও আপনারা নিশ্চুপ এটা তীব্র লজ্জার বিষয়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার প্রতীক হিসেবেই আপনাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। অথচ আপনাদের উপস্থিতিতেই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে, আর আপনারা নীরব থাকেন এটা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য গভীর হতাশার। তাই সারা বাংলা উত্তাল হওয়ার আগেই শিক্ষকদের সকল যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হোক।